জগন্নাথপুর প্রতিনিধি়:
জগন্নাথপুরে এক ‘সুদখোরের’ দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করায় জোরপূর্বক দখল করে রাখা ১১ মাস পর ফেরৎ পেলো অসহায় পরিবার।
উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৪ জুলাই কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া সুদের টাকার জন্য বসতবাড়ি দখলের অভিযোগ এনে প্রতিবেশি ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন জগন্নাথপুর থানায়।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে সেলিমের বাবা নুরুল ইসলাম ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার নিকট থেকে সুদে এক লাখ টাকা আনেন। পরে ধারাবাহিকভাবে নুরুল ইসলাম ওই টাকার সুদ বাবদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা রফিক মিয়াকে দেন। একপর্যায়ে সুদের লাভ দিতে না পারায় ১১ মাস আগে সুদখোর রফিক মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে নুরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে রাখেন।
নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া বললেন, গত চার জুলাই আমার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি মারা যাওয়া পর সুদখোর রফিক মিয়া দাবি করে বাবার নিকট ৬ লাখ টাকা পায়। এই টাকা পরিশোধের জন্য তিনি মানসিক অত্যাচার শুরু করেন।
এক পর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে আমাদের বসতবাড়ি দখল করে নেন রফিক মিয়া। এরপর থেকে মাকে নিয়ে অন্যত্র থেকেছি আমরা ।
তিনি জানালেন, নিরূপায় হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর মঙ্গলবার জগন্নাথপুর থানা পুলিশ বাড়িটি উদ্ধার করে দেয়।
অভিযুক্ত রফিক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায় নি। তবে তাঁর স্ত্রী বিলকিছ বেগম বললেন, পাঁচ বছরের জন্য নুরুল ইসলাম আমাদেরকে এই বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য স্ট্যাম্পে লিখে আমার স্বামীর কাছ থেকে তাঁরা টাকা নিয়েছে। কত টাকা নিয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্ট্যাম্পে লেখা আছে।
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হাসিম বললেন, রফিক মিয়া এলাকায় সুদখোর হিসেবে পরিচিত। নুরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেন রফিক। একাধিক বার তাকে সালিশ বৈঠকে বসার কথা বললেও সে সামনে আসে নি।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বাড়িটি উদ্ধার করে ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি।
টাকার বিষয়ে দুইটি স্ট্যাম্প পাওয়া গেছে। একটিতে ৫ শতাংশ সুদের কথাটি উল্লেখ আছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।