সুনামগঞ্জ ব্যুরো প্রধান :
সুনামগঞ্জে “হাওরের বাঁধ, কৃষি, নদী ও পরিবেশ সংকট নিরসনে করনীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, স্থানীয় ধান ও দেশীয় মাছের প্রজাতি রক্ষা করতে সকলকেই কাজ করতে হবে। হাওরের জন্য পৃথক বাজে প্রনয়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, সুনামগঞ্জে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড নামে একটি ভবন আছে। সেখানে কোন কর্মকর্তা নেই। অবিলম্বে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম চালুর দাবিও জানানো হয়।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউস মিলনায়তনে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), এসোসিয়েশন ফর ল্যাণ্ড রিফর্ম এণ্ড ডেভলপমেন্ট(এএলআরডি) ও পানি অধিকার ফোরামের যৌথ উদ্যোগে ও সুজন, পদ্মা এবং হ্উাসসহ কয়েকটি স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আয়োজক সংস্থা এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(এডমিন এণ্ড ফাইনেন্স) আবু সাঈদ।
বেলা’র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিদ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডীন অধ্যাপক ড. নজুেল ইসলাম।
আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা শামসুল করিম, সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোস্তফা ইকবাল আজাদ, সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল মাহমুদ, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শমসের আলী প্রমুখ।
প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়।
আলোচনা সভায়, সাংবাদিক, কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বেলা’র প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুনামগঞ্জে টুরিজম চালু হলেও ইকো টুরিজম চালু হয় নি। একই সাথে হাওর বাঁধ অপরিকল্পিত ভাবে করার ফলে হাওরের জীব বৈচিত্র্য’র ওপর মারাত্মক ভাবে প্রভাব পড়ছে। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে হাওরের দেশি প্রজাতির মাছ। সে গুলো আমাদের কাছ থেকে চিরতরে হারিয়ে গেলে ফেরানো কি সম্ভব? তিনি আরও বলেন, চাষ করা মাছে তো আর হাওরের মাছের স্বাদ পাওয়া যাবে। এখানে কৃষকের স্বার্থে বাঁধ নিমার্ণ করা হয় কিন্তু কৃষকের সাথে পরামর্শ করা হয় না। যতদিন পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধে প্রকৃত কৃষকদের সংযুক্ত করা হবে না তত দিন পর্যন্ত বাঁধ নিয়ম মাফিক হবে না। আর এসব কারণে হাওরের দেশি মাছসহ জীবও বৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। দেশি প্রজাতির কয়েক রকম ধান হারিয়ে যাচ্ছে। সে গুলোর দিকে দ্রæত কৃষি বিভাগকে নজর দিতে হবে। রাতা, টেপি সহ হাওর অঞ্চলে উৎপাদিত কয়েক ধরনের ধান নাই বললেই চলে। এক কথায় আমরা সবাই যদি পরিবেশ রক্ষা করতে না পারি তাহলে বিপদ একার হবে না সবার জন্যই হবে। বন্যা বা প্রাকৃতিক দুযোর্গ ধনী গরীব বুঝে না।