জগন্নাথপুর সুনামগঞ্জ থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর কেয়ারটেকারকে মারধর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অভিযোগ উঠেছে পুলিশ টাকার বিনিময়ে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে।
গতকাল সোমবার গ্রেপ্তারকৃত ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন।
এদিকে, জামিনে মুক্তি পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইসহাকপুর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বদরুল ইসলাম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, থানার সেকেন্ড অফিসার (উপপরিদর্শক) সাব্বির আহসান অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিয়ে মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে আমাকে গ্রেপ্তার করিয়ে সন্মানহানি করেছেন। আমি এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক ন্যায় বিচার চেয়ে পুলিশের উদ্ধৃতন কতৃপক্ষের নিকট সুবিচার জন্য লিখিত আবেদন করবো।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌরসভার ইসহাকপুর এলাকার যুক্তরাজ্য প্রবাসী দুই ভাই ইসলাম উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন। দেশে তাদের যৌথ জায়গা জমি ও ঘর রয়েছে। দেশে আসলে তারা ওই বাড়িতে বসবাস করেন। দেশ থেকে চলে যাওয়ার সময় ঘরের চাবি আপন চাচাতো ভাই বদরুল ইসলামের কাছে রেখে যান এবং দুই ভাইয়ের পরিবার ছাড়া অন্য কারো কাছে চাবি না দেওয়ার জন্য বলা হয়।
গত ১ এপ্রিল ইসলাম উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে একই গ্রামের বকুল মিয়া ঘরে ঢুকতে চাইলে এতে বাধা দেন বদরুল ইসলাম। এসময় ইসলাম উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে কয়েকজন অস্ত্র স্বস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বদরুল ইসলামকে হুমকি দেন। বিষয়টি থানায় জানালে জগন্নাথপুর থানার সেকেন্ড অফিসার সাব্বির আহসান ঘটনাস্হল পরিদর্শন করেন। ঘটনার ১৩ দিন পর গত শনিবার বকুল মিয়া বাদী হয়ে মারধর, ল্যাপটপ ও স্বর্ণের চেইন লুটপাটের অভিযোগ এনে ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে গত রোববার রাতে তাকে ভবের বাজারের নিজ দোকান থেকে বদরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সোমবার সকালে তাকে সুনামগঞ্জ প্রথম শ্রেণির হাকিম আদালতের হাজির করা হলে আদালত তাকে জামিনে মুক্তি দেন।
আওয়ামী লীগ নেতা বদরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে জগন্নাথপুর থানার সেকেন্ড অফিসার সাব্বির আহসান শুরু থেকেই আমার প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে অনৈতিক আর্থিক সুবিধা নিয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। সাব্বির আহসান তার মনগড়া মিথ্যা এজাহার লেখে এ মামলা দায়ের করিয়েছেন এবং কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই আমাকে গ্রেপ্তার করান। তবে বিজ্ঞ আদালত আমার জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিকে, মামলার এজাহারে তিন ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন লুটের কথা উল্লেখ থাকলেও এ প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদী বকুল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, আসামিরা আমাকে মারধর করে একটি ব্যাগ নিয়ে যায়। ব্যাগে কি ছিল আমি জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর থানার সেকেন্ড অফিসার সাব্বির আহসান মুঠোফোনে বলেন, আমি এ মামলার কোন দায় দায়িত্বে নেই। বরং ঘটনার পর আমি বদরুল ইসলামকে ওই ঘরের চাবি দিয়ে দিতে অনুরোধ করছি।
জগন্নাথপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুশংকর পাল বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে।