জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কয়েকদিনের বৃষ্টি ও ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে।
গতকাল রবিবার উপজেলা সদরের নজলুর নদীর বিকল্প সেতু পানিতে উঠে যাওয়ায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো মানুষ। গেল বছরও আষাঢের ঢলে সেতুটি পানিতে তলিয়ে গিয়ে চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে ভারি বৃষ্টিপাত হলে পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবী ছিল, সেতুটি উঁচু করে নির্মাণের জন্য কিন্তু সংশ্লিষ্টরা নিচু করেই সেতু স্থাপন করায় ভারি বৃষ্টিতেই নিমজ্জিত হয়। এছাড়া সেতুটির সংযোগ সড়কেও পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে নজলুর নদীর অপর ঝুঁকিপূর্ণ ডাক বাংলো সেতু দিয়ে দুই পারে যান চলাচল করছে হচ্ছে। এতে করে দীর্ঘ যানজট লেগে সীমাহীন জনদুর্ভোগ বেড়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সেতুটি পড়েছে মারাত্মক ঝুঁকিতে।
নলজুরের এই দুই সেতু দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামের লোকজনসহ পাশবর্তী উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জনসাধারণ কে উপজেলা সদরে জরুরি নানা কাজে আসতে হয়।
এলাকাবাসী ও এলজিইডি সূত্র জানায়,১৯৮৭ সালে নলজুর নদীর ওপর ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নের গুদামের সামনে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটি টেকসই থাকলেও একসঙ্গে বড় দুটি যান চলাচল করতে না পারায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যে কারণে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির মাধ্যমে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরাতন এ সেতু ভেঙে নতুন দৃষ্টি নন্দন আর্চ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মান্নান ২০২৩ সালের মার্চে সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করার পর নতুন সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ওই সময় বিকল্প হিসেবে হেলিপ্যান্ড এলাকায় একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়।
এলাকার লোকজনের অভিযোগ, বিকল্প সেতুটি তৈরির সময় এলাকার লোকজন বর্ষায় এটা ডুবে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করে আরও উঁচু করার দাবি জানিয়েছিলেন তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি বিষয়টি আমলে দেয়নি।
অপর দিকে ১৯৮৮ সালে নলজুর নদের ওপর ডাকবাংলো সেতুটি এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে নির্মাণ কাজ শুরু করেন।১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে সেতুর কাজ শেষ হয়। সেই থেকে সরো এ সেতু দিয়ে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে।২০২১ সালে নলজুর নদ খনন কালে সেতুর পিলারের কাছ থেকে খনন যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার সময় সেতুর দুটি অংশ দেবে যায়। এক বছর যান চলাচল বন্ধ থাকার পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জগন্নাথপুর পৌরসভা সেতুর দেবে যাওয়া অংশে ষ্টীলের পাটাতন বসিয়ে সেতুটি চালু করে।
পৌরশহরের নাগরিক মুজিবুর রহমান জানান, এবারও বৃষ্টির পানিতে গুদামের পাশে হেলিপ্যাড এলাকায়
বিকল্প সেতু ও সেতুর সংযোগ সড়ক ডুবে যাওয়ায়, যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা শুরুতে বিকল্প বেইলি সেতুটি আরও উঁচু করার দাবি জানিয়েছিলাম। তিনি বলেন, ডাক বাংলা সেতুটিও ঝুঁকিতে রয়েছে। জনদুর্ভোগ লাঘবে জরুরী ভিত্তিত্বে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
জগন্নাথপুর পৌরসভার কাউন্সিলর সুহেল আহমদ বলেন, নলজুর নদীর ওপরে নির্মিত দুটি সেতুই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির। বিকল্প সেতুটি উঁচু করে বসানোর জন্য আমরা দাবী করেছিলাম। কিন্তুু দাবীটি উপেক্ষিত হওয়ায় বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে সেতুতে পানি উঠে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
স্হানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানি বেড়ে যাওয়ায় বিকল্প বেইলি সেতুতে পানি উঠে। জনসাধারণের চলাচলের জন্য পদক্ষেপ নেব আমরা।