রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন রমজান মাসে ১ কোটি পরিবারকে সাশ্রয়ী মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করা হবে ।
বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে সোয়াবিন তেলের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তেলের দাম আমরা বাড়িয়েছি। কারণ, ৯০ ভাগ ভোজ্যতেল তেল আমরা ইমপোর্ট করি। আন্তর্জাতিক বাজারে সেই তেলের দাম বেড়েছে। কন্টেইনার ভাড়া বেড়েছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি আমরা ঠিক না করে দিই, তাহলে তো ব্যবসায়ীরা তেল আনবেই না। এজন্য ট্যারিফ কমিশন বৈঠকে বসে আন্তর্জাতিক বাজারের ১০-১৫ দিনের প্রাইস ফিক্সআপ করে। সব দেখে একটি প্রাইস ফিক্স করা হয়, যেটা হওয়া উচিত। আপনারা জানেন, তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ বছর আগে যেটা ছিল, সেটা এখন ডাবল হয়েছে। এখন যদি আমরা বলি, দাম বাড়াতে পারবে না, তাহলে তারা (ব্যবসায়ীরা) ইমপোর্ট করবে না। ইমপোর্ট না করলে তো আরও বড় ধরনের ক্রাইসিস হয়ে যাবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা তো সত্যি কথা যে, মানুষের কষ্ট হচ্ছে। আমরা যেটা চেষ্টা করছি, সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দেওয়ার। আমরা সরকারিভাবে চেষ্টা করছি রমজান মাসকে সামনে রেখে ১ কোটি মানুষকে আমরা এ ধরনের সামগ্রী দেবো সাশ্রয়ী মূল্যে। আগে যেভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে, সেই লিস্ট তো আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য দেওয়া হবে, সেখান থেকে তারা কালেক্ট করবে। যে চারটা পণ্য আমরা দিই, সেটার সাথে রমজান মাসে খেজুর ও ছোলা যোগ হবে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে তো লাভ হবে না। একটা বিষয় হতে পারে, আমরা যে দাম নির্ধারণ করে দিলাম, তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে ভোক্তা অধিকারসহ সরকারের বিভিন্ন হ্যান্ডস দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর উল্টোটা যদি বলি, পেঁয়াজের দাম ২৫ টাকা হয়ে গেল কেন? সেখানেও কিন্তু কৃষকরা বলছে, পেঁয়াজ রাস্তায় ফেলে দেবো। এটা কাঁচামাল। দুই দিন যদি ট্রান্সপোর্ট বন্ধ থাকে, এটার দাম কিন্তু বেড়ে যাবে। কৃষি মন্ত্রণালয় আমাদের একটি হিসাব দিয়েছে, জায়গাভেদে প্রতি কেজিতে ১৮ থেকে ২০ টাকা খরচ হয় কৃষকদের। এটাকে অন্তত ২৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। ২৫ টাকা যদি কুষ্টিয়া-রাজবাড়ীতে কৃষকরা বিক্রি করে, ঢাকায় এটা ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করতে হবে। এখন ঢাকায় যখন ২৫ টাকা হয়েছিল, কৃষিমন্ত্রী আমাকে বললেন, আমরা সব ইমপোর্ট বন্ধ করে দেবো, কৃষকরা তো কান্নাকাটি করছে। এটা হচ্ছে সমস্যা। যদি দাম কমে যায়, কৃষকরা বলেন, কী করব? আবার যখন বেড়ে যায়, ভোক্তারা বলেন, দাম বেড়ে গেছে।’