ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল, চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাছরিনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, শবনম ফারিয়াসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পায়নি পুলিশ। এ কারণে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার সাব-ইন্সপেক্টর রাজিব হাসান ৪ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৫ জনকে অব্যাহতির আবেদন করে ২৭ ফ্রেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বুধবার (২ মার্চ) ধানমন্ডি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর এশারত আলী এ তথ্য জানান। আগামী ২৭ মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
চার্জশিটভুক্ত অন্য দুই আসামি হলেন-প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে আকাশ ও ক্যাটাগরি হেড মোহাম্মদ আবু তাহের ওরফে সাদ্দাম। এরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
অব্যাহতির সুপারিশ করা অন্য দুই আসামি হলেন-প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বিপণন কর্মকর্তা এস এম আরিফ রেজা হোসাইন ও এক্সিকিউটিভ অপারেশন আবু কায়েস। আবু কায়েসের বিরুদ্ধে ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পেলেও পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। নাম-ঠিকানা পেলে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী শামীমা নাছরিনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
যে কারণে অব্যাহতির সুপারিশ:
তাহসানের বিষয়ে বলা হয়েছে, ইভ্যালিতে তাহসান প্রতিষ্ঠানের চিফ গুডনেস অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি অর্ডার গ্রহণ ও ডেলিভারি সংক্রান্ত কোনো ধরনের ভূমিকা বা দায়িত্বে ছিলেন না। সেখানে কর্মরত থাকাবস্থায় কোম্পানির মাত্র দুইটি লাইভ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি। লাইভ দিতে গিয়ে গ্রাহকদের রিভিও নেগেটিভের বিষয়টি তিনি উপলদ্ধি করতে পারেন। পরে তিনি অব্যাহতির আবেদন করেন। পণ্যের অর্ডার ও ডেলিভারি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই তিনি চাকরি ছেড়ে দেন। তিনি প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িত না।
শবনম ফারিয়া: ঘটনায় সময় শবনম ফারিয়া ইভ্যালিতে কর্মরত ছিলেন না। তিনি গত বছরের ১ জুন থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ঘটনার সময় কর্মরত না থাকায় তার ওপর দায় বর্তায় না।
উল্লেখ্য, ঘটনার আগে ফারিয়া প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে ইভ্যালিতে দায়িত্বে ছিলেন।
মিথিলা: ঘটনার সময় মিথিলা সেখানে কর্মরত ছিলেন না। গত বছরের ১১ মে তিনি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন। ঘটনার সময় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত না থাকায় তার ওপর দায় বর্তায় না।
এ মামলায় বিচারিক আদালত থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মিথিলা ও ৬ ফেব্রুয়ারি শবনম ফারিয়া স্থায়ী জামিন পান। বুধবার জামিন পান তাহসান। এর আগে তারা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেন।
গত বছর ৪ ডিসেম্বর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির হয়ে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল, চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।