নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিকভাবে ভুগতে থাকা দেশটিতে খাবার এবং জ্বালানির জন্য আন্দোলন শুরু করেছে সাধারণ নাগরিকরা। আন্দোলন এতোটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে তা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এরই মধ্যে বিধি নিষেধ আরো কঠোর করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে তারা ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে।
রোববার (৩ এপ্রিল) বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে একথা জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে কারফিউ জারি করা হয় শ্রীলঙ্কায়। সে সময় জারি করা এক নোটিশে কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া সড়কে, পার্কে, ট্রেন স্টেশন, সমুদ্র উপকূলে এবং সড়কে চলাচল না করতে নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।
এছাড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম। ‘টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশে’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের খুদে বার্তায় জানানো হয়েছে।
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দ্বীপ দেশটি ১৯৪৮ যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে কষ্টদায়ক অর্থনৈতিক দুরবস্থায় পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। দ্রব্যমূল্য ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে এবং বিদ্যুতের ঘাটতি চরমে উঠেছে।
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বিদেশি মুদ্রার অভাবে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। লোকজনকে জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে। কাগজের অভাবে স্কুলের পরীক্ষা ও দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটে এমনকি সড়কবাতিও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।