ফের বাড়ানো হয়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে লিটার প্রতি ৩৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে, যা কার্যকর হবে ৭ মে থেকে। টিসিবি’র তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি বেড়েছে ৮০ টাকা। ২০২১ সালের ৫ মে বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১১৮ টাকা। গত চার বছরে যেসব ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে তার মধ্যে অন্যতম সয়াবিন ও পাম অয়েল।
সর্বশেষ গত ৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তেল দাম বাড়িয়েছে। তখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৮, খোলা সয়াবিনের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪৩, বোতলজাত ৫ লিটারের দাম ৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৭৯৫ ও পাম তেলে ১৫ বাড়িয়ে ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এবার নতুন দাম নির্ধারণের ফলে এখন থেকে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৯৮ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম হবে ৯৮৫ টাকা। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা এবং খোলা পাম তেল ১৭২ টাকায় বিক্রি হবে।
টিসিবি’র তথ্য অনুয়ায়ী, ২০১৯ সালে দেশের বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ছিল ১০৪ টাকা। ২০২০ সালে সেটি বেড়ে হয় ১১৩, ২০২১ সালে ১৩০ এবং ২০২২-এর শুরুতে এসে হয় ১৬৮ টাকা। এ ছাড়া পামওয়েলের লিটার (খোলা) ২০১৯ সালে ছিল ৫৮ টাকা, ২০২০ সালে ৭৮, ২০২১ সালে ১০৭ এবং ২০২২ সালের শুরুতে হয় ১৫০ টাকা।
তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে গত মার্চ মাসে কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে মাত্র ৫ শতাংশ বহাল রেখে আমদানি, পরিশোধন ও ভোক্তাপর্যায়ে সব ধরনের ভ্যাট তুলে নেয় সরকার। শুল্ক কমানোর পর গত ২০ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ঘোষণা করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
ওই ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৩৬ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের এক বোতল তেল ৭৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তেলের দাম বেশি-তারপরও সরবরাহ কমের কারণ জানতে চাইলে দেশের অন্যতম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘সরকারের নির্ধারিত দামেই আমরা চাহিদা অনুযায়ী মিল থেকে তেল সরবরাহ করছি। আমাদের উৎপাদন বা সরবরাহে কোনো সংকট নেই। বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। সঙ্গত কারণে আমাদের বাজারেও তার প্রভাব পড়বে এমন ভাবনায় ডিলার ও খুচরা দোকানিরা তেল বিক্রি না করে মজুত করছেন। পরে বেশি দামে বিক্রি করবেন, এ কারণেই তারা তেলের সরবরাহের সংকট বলে অজুহাত দেখাচ্ছেন।’