জুমার দিন সাপ্তাহিক শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যেগুলোর গুরুত্ব ও সওয়াব অনেক বেশি। তন্মধ্যে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর ওপর অধিকহারে দরুদ পাঠ করা অন্যতম। সে হিসেবে শুক্রবারে দরুদ পাঠের তাৎপর্য, সওয়াব ও ফজিলত সবিশেষ।
মহানবী (সা.)-এর প্রতি সালাম বা দরুদ পাঠ প্রত্যেক মুমিনের আবশ্যিক ওপর কর্তব্য। মহান আল্লাহ নিজেই বান্দাদের রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ-সালাম পাঠের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত-দরুদ পেশ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরাও তার প্রতি সালাত পেশ করো এবং তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও।’ (সুরা আহজাব, হাদিস : ৫৬)
দরুদ পাঠ করলে বা রাসুল (সা.)-এর কাছে সালাম পাঠালে আমাদেরই লাভ। আবদুল্লাহ ইবনে আমর আস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করবে, আল্লাহ তার ওপর দশবার রহমত পাঠাবেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৪)
জুমার দিনে বেশি দরুদ পাঠের ফজিলত:
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে নবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জুমার দিনে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ জিবরাইল (আ.) এইমাত্র আল্লাহ তাআলার বাণী নিয়ে হাজির হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পৃথিবীতে যখন কোনো মুসলমান আপনার ওপর একবার দরুদ পাঠ করে— আমি তার ওপর দশবার রহমত নাজিল করি এবং আমার সব ফেরেশতা তার জন্য দশবার ইস্তেগফার করে।’ (তারগিব, হাদিস : ৩/২৯৯)
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার ওপর জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। কারণ আমার উম্মতের দরুদ জুমার দিন আমার কাছে পৌঁছানো হয়। যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পাঠাবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন সবচেয়ে আমার নিকটতম হবে।’ (তারগিব, হাদিস : ১৫৭)
আলী (রা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর ওপর জুমার দিন ১০০ বার দরুদ পাঠ করে, সে কেয়ামতের দিন এমন অবস্থায় উঠবে যে, তার চেহারায় নূরের জ্যোতি দেখে লোকরা বলাবলি করতে থাকবে এই ব্যক্তি কী আমল করেছিল!’ (কানজুল উম্মাল, হাদিস : ১৭৪)
অন্য বর্ণনায় নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন আসরের নামাজের পর নিজ স্থান থেকে ওঠার আগে ৮০ বার এই দরুদ শরিফ পাঠ করে, ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিইয়্যিল উম্মিইয়ি ওয়া আলা আলিহি ওয়া আস হাবিহি ওয়াসাল্লিমু তাসলিমা’। তার ৮০ বছরের পাপ ক্ষমা হয়ে যায় এবং ৮০ বছরের ইবাদতের সওয়াব তার আমলনামায় লেখা হয়।’ (আফদালুস সালাওয়াত : ২৬)