জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
লিবিয়া হয়ে ইতালিতে যাওয়ার পথে দালাল চক্রের কবলে পড়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নেক শ্রীধরপাশা গ্রামের একুয়ান ইসলামের (১৯) মৃত্যুর অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার শ্রীধরপাশা গ্রামের বাসিন্দা লিবিয়ায় বসবাসরত দালাল আলী হোসেনের বাবা আবুল মিয়া (৫০) ও মা আছমা বেগম (৪০)।
ওই মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৩ এপ্রিল আলী হোসেনের সঙ্গে সাত লাখ টাকা চুক্তিতে লিবিয়ায় যান শ্রীধরপাশা গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র একুয়ান ইসলাম। সেখানে পৌঁছার পর দালাল চক্র তাঁকে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালায়। একুয়ানকে বাঁচাতে দালাল চক্র তাঁর পরিবারের কাছে আরও টাকা চায়। ছেলেকে বাঁচাতে ২৩ এপ্রিল একুয়ানের বাবা আরও সাত লাখ টাকা পাঠান আলী হোসেনের বাবা আবুল মিয়া ও মা আছমা বেগমের মাধ্যমে। চলতি বছরের ১৫ জুন আরও ৫ লাখ টাকা দিয়ে একুয়ানকে ইতালিতে পাঠানোর চুক্তি হয় তাঁদের সঙ্গে। ১৬ জুন খবর আসে, একুয়ান মারা গেছেন। পরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ২৯ সেপ্টেম্বর একুয়ানের লাশ দেশে আনা হয়। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর ৩ অক্টোবর একুয়ানের বাবা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের হবিগঞ্জ জেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন মোহনপুর এলাকা থেকে রোববার গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ১টি ভ্যানিটি ব্যাগ, ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা, ৭টি মুঠোফোন, ১টি এটিএম কার্ড, ২টি চেকবই ও ১টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদ গতকাল এ ঘটনায় জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ সার্কেল শুভাশীষ ধর জানান, মানব পাচারকারীদের কবলে পড়ে অনেক পরিবার সর্বস্ব হারাচ্ছে। তাই মামলাটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।