নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত খসড়া আইন জাতীয় সংসদে রোববার বিল আকারে উত্থাপন করা হচ্ছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এটি উত্থাপন করবেন। পরে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতেই বিলটি পাঠানো হবে। জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পাঁচদিন বিরতির পর রোববার বেলা ১১টায় একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশন আবার শুরু হচ্ছে। পাঁচদিন মুলতবির পর শুরু হওয়া এ অধিবেশনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত বিল বা খসড়া আইনটি উত্থাপিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করবেন।
সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগের জন্য বিলটি আনা হচ্ছে। কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই রাষ্ট্রপতিকে নতুন কমিশন গঠন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আইনটি জাতীয় সংসদে উত্থাপন ও পাস করে গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য হাতে চার সপ্তাহ সময় রয়েছে।
এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন- ২০২২’ এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ওইদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হবে।
সিইসি ও ইসি নিয়োগে যোগ্যতার বর্ণনা দিয়ে সচিব বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হতে হলে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। বয়স কমপক্ষে ৫০ বছর হতে হবে। একইসঙ্গে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি বা বিচার বিভাগীয় পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সংসদ সচিবালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সংসদীয় কমিটির রিপোর্টের জন্য বিলটির সময় খুব কম দেওয়া হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব বিলটি পাস করা হবে। এটি পাস হওয়ার পরে নতুন নির্বাচন কমিশন আইনের আলোকে সিইসি ও ইসি নিয়োগ করা হবে।
ইসি গঠনে কোনো আইন না থাকায় এর আগে তৃতীয়বারের মতো ইসি গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ইসি গঠন নিয়ে ২০১১ সালে প্রথম সংলাপ শুরু করেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।
এবারের সংলাপে অংশ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন ও স্বাধীন, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী ইসি গঠনের দাবি জানিয়েছে প্রায় সবগুলো রাজনৈতিক দলই।
গত ১৬ জানুয়ারি ১৬তম অধিবেশন শুরু হয়। সংবিধানের বিধান অনুযায়ী, বছরের প্রথম অধিবেশন হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এদিন জাতীয় সংসদে ভাষণ দেন। ১৭ জানুয়ারি এ ভাষণ সম্পর্কে চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এটি সমর্থন করেন সরকারি দলের সদস্য সামসুল হক টুকু।
ওই দিন ভাষণ সম্পর্কে ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। প্রথম দিন ২ জন প্রতিমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। দিনের আলোচনা শেষে স্পিকার ২৩ জানুয়ারি রোববার বেলা ১১টায় পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন।