প্রায় আড়াই বছর আগে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ডালিয়া রাণী রায়কে বিয়ে করেন রাজেশ কুমার দাশ। বিয়ের পর কোনো মতে সংসার চললেও সম্প্রতি আইনজীবী হিসেবে পাশ করার পর স্বপ্ন দেখছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে সংসার সাজানোর। হবিগঞ্জ শহরে বাসাও খুঁজেছিলেন ভাড়া নেওয়ার জন্য। তবে সেই সব স্বপ্ন থমকে দাঁড়ায়, যখন জানতে পারেন তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গেছে।
তবে স্বামীকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজেশের স্ত্রী ডালিয়া। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা। তবে ১০ লাখ টাকা দরিদ্র এই দম্পতির কাছে পাহাড়সম বোঝার মতো। সামর্থ্য না থাকায় সবার সহযোগিতা চেয়েছে পরিবারটি।
বানিয়াচং উপজেলার সুনারু গ্রামে বাড়ি রাজেশের। এলএলবি পাশ করার আগে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। তবে ভাগ্য ফেরাতে পারেননি তিনি।
রাজেশ বলেন, ‘আমার মা নেই, বাবা অসুস্থ। সাত ভাই-বোনের মধ্যে এখনো দুই বোনের বিয়ে বাকি। ছোটভাই মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। তার পাঠানো টাকায় চলছে সংসার। গ্রামে একটি বাড়ি ছাড়া আমাদের আর কোনো সম্পদ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সমস্যায় ভুগছি। ঋণ করে হবিগঞ্জ ও ঢাকায় চিকিৎসা নিয়েছি। তারা বলেছেন, আমার দুটি কিডনিই বিকল। দ্রুত কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন। আমার স্ত্রী একটি কিডনি দিতে চেয়েছে। তবে সেটি ট্রান্সপ্লান্ট ও অন্যান্য খরচ বাবদ প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা। কিন্তু আমাদের সেই সামর্থ্য নেই। এজন্য সমাজের বিত্তবান ও মানবিক মানুষের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।’
রাজেশের স্ত্রী ডালিয়া বলেন, ‘টিস্যু পরীক্ষার পর ডাক্তার বলেছেন, আমার কিডনি নিয়ে রাজেশ সুস্থ হতে পারবে। আমিও চাই আমার স্বামী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠুক। তবে সেটি প্রতিস্থাপনে যে খরচ লাগবে তা আমরা বহন করতে পারছি না। তাই আমার স্বামীকে বাঁচাতে সরকারের কাছে প্রার্থনা জানাই।’