জগন্নাথপুরে থমকে আছে গ্রামীণ সড়ক সংস্কারের সরকারি উদ্যোগ

প্রকাশিত: ৭:০৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ | আপডেট: ৭:০৯:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪

 

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

জগন্নাথপুরে দুই দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শত কোটি টাকার সড়ক সংস্কারে সরকারি উদ্যোগ থমকে আছে। তবে এগিয়ে এসেছেন প্রবাসী বিত্তবানরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ১৮ জুন থেকে এ উপজেলায় প্রথম দফা বন্যা দেখা দেয়। পরে আবার পহেলা জুলাই থেকে নদ—নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। প্রায় একমাস যাবৎ পানির নিচে থাকা গ্রামীণ সড়কগুলো পুরোদমে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এতে বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে। একারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী।
এদিকে, গত তিন মাস যাবৎ কেশবপুর—এরালিয়া ভায়া রসুলগঞ্জ সড়কে এবং গত ২০ আগস্ট থেকে জগন্নাথপুর—শিবগঞ্জ—বেগমপুর সড়কে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আওতাধীন এই উপজেলার জগন্নাথপুর—শিবগঞ্জ—বেগমপুর সড়কে ৬ কিলোমিটার, কলকলিয়া—তেলিকোনা—চণ্ডীডর সড়কে ৫ কিলোমিটার, চিলাউড়া—হলিদপুর সড়কে ৫ কিলোমিটার, কেশবপুর—এরালিয়া ভায়া রসুলগঞ্জ সড়কে ১০ কিলোমিটার, শিবগঞ্জ—রানীগঞ্জ সড়কে ২ কিলোমিটার ও মজিদপুর—এরালিয়া সড়কের ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশাল গর্ত ও খানা—খন্দ রয়েছে। সর্বমোট এ উপজেলার প্রায় ১০০ কিলোমিটার সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। তবে এসব সড়ক সচল রাখতে স্থানীয়দের উদ্যোগে সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ও প্রবাসীদের অর্থায়নে সামাজিক সংগঠনগুলো এই দায়িত্ব পালন করছে।
ঘোষগাঁও জাগ্রত যুব সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিকরুল আলম বলেন, জগন্নাথপুর—বেগমপুর সড়কের ঘোষগাঁও এলাকায় বন্যার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক দফা সংস্কার কাজ করানো হয়েছে, বতর্মানেও মেরামত কাজ চলছে।
ইসমাইলচক গ্রামের সাইফুল ইসলাম জাবেদ বলেন, রানীগঞ্জ—স্বজনশ্রী সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার অংশে প্রবাসীদের অর্থায়নে সংস্কার কাজ করা হয়েছে। ফলে এখন যানবাহন চলাচল করছে।
এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা নাগরিক ফোরামের সদস্য জুয়েল আহমদ বলেন, ২০২২ সালের স্মরণকালের বন্যার পর থেকে গত দুই বছরে এ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কোন সড়কে কাজ করা হয়নি। ফলে বর্তমানে উপজেলার সবকয়টি সড়কের বেহাল দশা। চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন উপজেলাবাসী। স্থানীয়দের উদ্যোগে মেরামত না হলে যান চলাচল বন্ধ থাকত। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে দ্রুত কাজ শুরুর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন বলেন, দুই দফা বন্যায় উপজেলার ৯০০ কিলোমিটার সড়কপথের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার অংশ ধরা হয়েছে। ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৫টি। যার আনুমানিক ক্ষতি ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে সেই তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। তবে এরমধ্যে অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ ও কালভার্টের কাজ দ্রুতই শুরু করা হবে।