মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক (জাপা) প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার মারা গেছেন
অনলাইন ডেস্কঃ
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক (জাপা) প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আজ শুক্রবার ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ
তার ভাতিজা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউল মোস্তফা সোহেল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে মৃতদেহ কোথায় সমাহিত করা হবে তা এখনো নিহতের পারিবারের কোনো সদস্য নিশ্চিত করতে পারেনি।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী জানান, এখন মরদেহের ময়নাতদন্তসহ সব কাজ শেষ করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সৈয়দ কায়সার অসুস্থ হয়ে প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কায়সার মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করেছিলেন। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন আইনজীবী তানভীর আল আমিন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কায়সারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। তার বিরুদ্ধে গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনের ১৩টি ও ধর্ষণের দু’টিসহ মোট ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ১৪টি প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় ট্রাইব্যুনালের রায়ে। ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যু
এছাড়া ১, ৯, ১৩ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর, ৭ নম্বর অভিযোগে সাত বছর ও ১১ নম্বর অভিযোগে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। ৪ ও ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ অভিযোগগুলোতে কায়সারকে কোনো সাজা দেননি আদালত।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল দায়ের করেন সৈয়দ কায়সার। আপিলে খালাসের আরজিতে ৫৬টি যুক্তি তুলে ধরা হয়। এছাড়া ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করা হয়।
হবিগঞ্জের মাধবপুরের ইটাখোলা গ্রামের সৈয়দ সঈদউদ্দিন ও বেগম হামিদা বানুর ছেলে সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের জন্ম ১৯৪০ সালের ১৯ জুন। কায়সারের বাবা সৈয়দ সঈদউদ্দিন ১৯৬২ সালে সিলেট-৭ আসন থেকে কনভেনশন মুসলিম লীগের এমএলএ নির্বাচিত হন। ওই বছরই মুসলিম লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন কায়সার। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত কায়সার মুসলিম লীগ সিলেট জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পরাজিত হন।