বিমানবন্দরে যেন প্রবাসীরা হয়রানির শিকার না হন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৭:২৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২ | আপডেট: ৭:২৩:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । ফাইল ছবি

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের প্রায় এক কোটির মতো প্রবাসী আছে। তারা বিভিন্ন সময়ে ছুটিতে আসেন ৷ তারা এসে যেন বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার না হন। তাদের যথাযথ সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সব সেবা ডিজিটালাইজ করে ফেললে বিষয়টি আরও সহজ হবে।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ৫০ বছর পূর্তি ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বলাকা ভবনের অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পেসেঞ্জার সার্ভিস সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনলাইনে টিকিটিং, রিজারভেশন, বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চেক-ইন সবকিছু অনলাইনে হবে। এটা আমাদের প্রবাসীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর সবদেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে ছিলাম।

বিমানের সেবা নিতে যাত্রীরা যাতে কোনো ধরনের কষ্ট না পায় সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাস্টমস সিস্টেমটাও সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে ফেলতে হবে। মানুষ যখন বিদেশ থেকে আসে তখন হয়তো কিছু পণ্য ক্রয় করে নিয়ে আসতে চায়। তারা যেন কোনো হয়রানির মধ্যে না পড়ে। পুরোটা ডিজিটালাইজড হয়ে যায়, সহজেই যাত্রী সেবা দেয়া সম্ভব হবে। সে বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।’

দেশের সবকটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আরও উন্নত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘দেশে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা গড়ে তুলছি। সেখানে বিনিয়োগের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। সেখানে শিল্পায়ন হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যোগাযোগ ব্যবস্থা যত সুন্দর হয়, দ্রুত হয় বিনিয়োগকারীরা এখানে আসবেন, বিনিয়োগ করবেন।

‘আমাদের দেশের জনগণ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন, তাদেরও যোগাযোগটা ভালো হলে কর্মক্ষেত্রের দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তা ছাড়া বিনোদন ক্ষেত্রটাও আরও সুগম হবে। সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে বর্তমানে চারটি বৃহৎ পরিসরের বোয়িং ৭৭৭-৩০০-ইআর, চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত চারটি ৭৮৭-৮ ও দুটি ৭৮৭-৯ সহ মোট ছয়টি ড্রিমলাইনার, ছয়টি ৭৩৭-৮০০ এবং পাঁচটি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ আমরা সংগ্রহ করি। এখন ২১টি উড়োজাহাজ নিয়ে বিমান চলছে।’

 

তিনি বলেন, ‘আমরা যে নতুন উড়োজাহাজগুলো কিনেছি, সেগুলো যেন যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যেন থাকে, সুন্দরভাবে যেন রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, সেটা সবার কাছে আমার অনুরোধ।’

নিজস্ব ব্যবস্থাপনা ও জনবল দিয়ে অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার রিপ্লেসমেন্ট এবং বোয়িং ৭৮৭ এর সি-চেক কার্যক্রম দেশে শুরু হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কাজেই এই টেকনোলজি শেখা, এটাকে নিয়ে আসা, এটাকে কার্যকর করার দিকে আমাদের আরও বেশি করে মনোযোগ দিতে হবে। যাতে আমাদের অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে না হয়। তাতে আমাদের দেশের অনেক বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলো অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আরও বাড়ানো দরকার। মালদ্বীপে ইতিমধ্যে বেসরকারি খাত থেকে বিমান যাওয়া শুরু করেছে। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ বিমান…আমি মনে করি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে…, সবখানে লাভ-লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা এবং কার্গো পরিবহন এটা একান্ত ভাবে দরকার।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে কার্গো বিমান দেখতে চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি চাই আমাদের বিমানে নিজস্ব কার্গো প্লেন থাকবে। কারণ পণ্য পরিবহন করলে বিমানই লাভবান হবে। কাজেই দুটো কার্গো বিমান ক্রয় করা একান্তভাবে জরুরি বলে আমি মনে করি। প্যানডেমিকের জন্য অনেক টাকা-পয়সা আমাদের খরচ করতে হয়েছে এবং আমরা বিনে পয়সায় ভ্যাকসিন দিচ্ছি, বিনে পয়সায় টেস্ট করা হচ্ছে।

‘তারপরও আমি বলব যে, এখন থেকে উদ্যোগ নিলে পরে যথাযথভাবে এটা ক্রয় করা সম্ভব। কার্গো সার্ভিস চালু থাকলে বিমান আরও লাভজনক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমি চাই আমাদের কার্গো হ্যান্ডলিং, বিমান হ্যান্ডেলিং আন্তর্জাতিক মানের হোক।’