মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ ব্যুরো প্রধান :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্নাকে দলবেধে ধর্ষণের পর ছয় টুকরা করে মরদেহ গুমের চেষ্টার মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূল জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি জিতেশ চন্দ্র গোপ।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে সুনামগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলামের আদালতে হাজির করলে এ স্বীকারোক্তি দেন জিতেশ। বিকেলে ৪টায় পুলিশ তিনদিনের রিমাণ্ড শেষে সিআইডি জিতেশ চন্দ্র গোপ, অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত চন্দ্র গোপকে আদালতে হাজির করে। সন্ধ্যা ৬টায় রিমাণ্ড শোনানী শেষে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) পরিদর্শক লিটন দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার প্রধান আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানাযায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আব্দুর রহিমের আদালতে তিন আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে আদালত তাদের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি (রোববার) দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহানের আদালতে হাজির করে দ্বিতীয় দফা আট দিনের রিমান্ড আবদেন করলে আদালত তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, ১৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্না ঔষধ কেনার জন্য অভি মেডিকেল হলে যান। ওই সময় অভি মেডিকেল হলের মালিক প্রবাসীর স্ত্রীকে একটি ট্যাবলেট খাইয়ে জ্যোৎস্না বসতে বলেন। পরে জ্যোৎস্না তন্দ্রাছন্ন হয়ে পড়েন। জোৎস্নার বাসায় ফিরতে দেরী হওয়ায় নিহতের ছোট ভাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই ফার্মেসিতে গিয়ে দেখে ফার্মেসি বন্ধ। পরে ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে মোবাইলে কল দিলে তিনি জানান, তার বোন ওষুধ না পেয়ে চলে গেছেন।
১৮ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি পুলিশ নিয়ে অভি মেডিকেল নামের ঔষধের দোকানের তালা ভেঙ্গে প্রবাসীর স্ত্রী জোৎস্নার খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেন। ওই দিনই জোৎস্নার ভাই হলাল মিয়া বাদী হয়ে জিতেশ চন্দ্র গোপকে প্রধান আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ১৮ ফেব্রæয়ারি (শুক্রবার) দুপুরে সিআইডির একটি টিম ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। প্রধান আসামি (পলাতক) জিতেশ চন্দ্র গোপকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইদিন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।