সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের চাপতির হাওর পরিদর্শনে কৃষিমন্ত্রী: কৃষক ভাইদের পরিবার পরিজনের পাশে আমরা আছি

মোহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ :
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, তিনি বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মানব দরদী একজন মানুষ। তাঁকে আমরা মানবতার মা বলে দাবি করি। ইনশাল্লাহ তিনি বেঁচে থাকতে এ এলাকার ক্ষতিগ্রস্তা কৃষক ভাইদের পারিবার পরিজন মা-বাবাসহ সকলের পাশে আছি।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার চাপতির হাওরের ভেঙ্গে যাওয়া বৈশাখীর বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশ আজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি নাই। দেশে আজ খাদ্যের সংকট নাই। খাদ্যের জন্য হাহাকার নাই। তিনি বলেন, শুধু হাওরে প্রকৃতির কারণে প্রকৃতির অভিশাপে তারা কষ্ট করবে। এটা হতে পারেনা। তারা আমাদের দেশের নাগরিক। এখানে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, হাওর এলাকায় সারা বছরে একটি মাত্র ফসল হয়। সেটা হচ্ছে বোরো ফসল। এই ফসলই এ এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা। তিনি বলেন, ফসলহারা কৃষকের ঘরে ধান নাই, তারা খাবে কি ? তারা যাতে পরিবার পরিজন, বাবা-মা নিয়ে না খেয়ে থাকে এ জন্য ভিজিএফসহ নানা ধরেন সহায়তা দেয়া হবে। যাতে কোন মানুষ অভুক্ত না থকে সে ব্যবস্থা করা হবে। আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি এবং আমরা কৃষক ভাইদের পাশে আছি।
কৃষিমন্ত্রী অরো বলেন, হাওর এলাকার কৃষক ভাইদের জন্য, হাওর এলাকার মানুষের জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা দিন-রাত গবেষণা করে যাচ্ছেন। যাতে আমরা যদি একটা ধানের জাত অবিষ্কার করতে পারি। ব্রিধান-২৮ ও ব্রিধান-২৯ জাতের ধানের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন আগে পেকে যায় বা কাটা যায়। তাহলে আমাদের হাওর এলাকার কৃষক ভাইয়েরা আগাম বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তিনি বলেন, আগামী বছর ফসলহারা কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও কীট নাশক দেয়া হবে।
এসময় সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি, সিলেট ও সুনামগঞ্জ সংরক্ষিত সংসদ সদস্য শামীমা আক্তার খানম কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মহাপরিচালক বেনজির আলম ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন প্রমুখ। এর আগে মন্ত্রী উপজেলার বরাম হাওরের তুফানখালি ফসল রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন।
পরে কৃষিমন্ত্রী সদর উপজেলার দেখার হাওরের বাহাদুরপুর এলাকায় স্বল্পজীবনকালীন আগামজাত বিনাধান-১৭ এবং উচ্চফলনশীল ব্রিধান-৮৯ কর্তন ও কৃষকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এসময় তিনি ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ধান কাটার যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার’ কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেন। এদিকে, পাহাড়ী ঢলে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ ষোলঘর পয়েন্টে গত ২৪ ঘন্টায় ৫০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদ সীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
, মাসুদ খাঁ তার দুই ছেলে ও শ্যালক পুত্রকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে বাড়ির পাশে জমিতে ধান কাটতে যান। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে মকবুল খাঁ ও তার ছেলে মাসুদ খাঁ ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই সঙ্গে মকবুল খাঁর ছেলে রিমন খাঁ (১১) ও শ্যালক পুত্র তানভীর হোসেন(৭) আহত হন। শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মো. আবু তালেব বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আহতদের নিকটতম হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়েছে।