জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে সাজানো বাগান তছনছ করে দিয়েছে হারুনের। ঝড়ে বসতঘরে গাছের চাপায় স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পাগল প্রায় তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় এ হৃদয়বিদায়ক ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ওই গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চকবানিয়াপুর গ্রামের হারুন মিয়া তাঁর ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি প্রবাসীর বাড়ী দেখা শুনার পাশাপাশি স্থানীয় মিনহাজপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্যারা শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন।
আজ ভোরে উপজেলার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেলে টিনসেট ঘরের ওপর পাশের একটি গাছ পড়ে হারুন মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৪), মেয়ে মাহিনা আক্তার (৪) ও ছেলে হোসাইন মিয়া ( ১) ঘটনাস্হলেই মারা যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মৃর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন হারুন মিয়া। কথা বলার শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেন।
এবিষয়ে জানতে হারুন মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। অনেকোক্ষণ পর হারুন বলেন, রোজার জন্য সেহরী খাওয়ার পর আমার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঘুমাতে যান। আমি ফজলের নামাজের জন্য অন্য একটি ঘরে ছিলাম। কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে আমার সুখের সাজানো বাগান শেষ করে দিলো। ঝড়ের মধ্যে প্রাণপণ চেষ্টা করে পারলাম না তাদের বাঁচাতে বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বলেন, স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখের পরিবার ছিল হারুনের। পরিবার সবাইকে হারিয়ে হারুন মিয়া নির্বাক। তাদের মৃত্যু এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জগন্নাথপুর থানার ওসি ( তদন্ত) সুশংকর পাল জানান, ময়না তদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। পরিবারের শোকের হারুন মিয়া বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। প্রশাসনের পক্ষে হারুন মিয়াকে আমরা নগদ ৬০ হাজার সহায়তা প্রদান করেছি।