আন্তর্জাতিক ডেস্ক- ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপ ঘনিয়ে আসছে। আগামী ২৪ এপ্রিল এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে জীবনযাত্রার ব্যয় ও অর্থনীতি আলোচনার কেন্দ্রে থাকলেও অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না| তবে দুই প্রার্থীর টেলিভিশন বিতর্ক জমে উঠেছে।
বিবিসি ও আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে ডানপন্থী প্রার্থী মেরিন লা পেনের এক বক্তব্য নিয়ে আলোচনা সরব হয়ে উঠেছে। গতকাল এক টেলিভিশন বিতর্কে তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে হিজাব বন্ধ করে দেবেন। অন্যদিকে, এর বিপরীতে অপর প্রার্থী বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁন বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দেশে গৃহযুদ্ধ বেধে যাবে।
টেলিভিশন বিতর্ক চলাকালে লা পেন বিতর্কিত পরিকল্পনা হিজাব নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হিজাব মুসলিমদের চাপিয়ে দেওয়া বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে আমার যুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। এ সময় লা পেনকে উদ্দেশ্য করে ম্যাক্রোঁন বলেন, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি আপনি গৃহযুদ্ধের সূচনা করতে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স হচ্ছে আলোকবর্তিকা ও সভ্যতার প্রতীক। জনসম্মুখে হিজাব নিষিদ্ধ করলে এ ক্ষেত্রে ফ্রান্স হবে বিশ্বের প্রথম দেশ। এটা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে না বলেও জানান তিনি।
দেশটির দুই ধাপের ভোটের প্রথম পর্বে ডান-বাম ও মধ্যপন্থী মিলিয়ে ১২ জন প্রার্থী অংশ নেন। গত ১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ভোটের প্রথম পর্বে ক্ষমতাসীন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন জয় পেয়েছেন। দ্বিতীয় পর্বে ম্যাক্রোঁর সঙ্গে লড়বেন চরম ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী প্রতিদ্বন্দ্বী মেরি লা পেন। ২০০২ সালের পর থেকে কোনো ফরাসি প্রেসিডেন্ট পরপর দুবার নির্বাচিত হননি। প্রথম পর্বে জয় পেলেও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর জন্য দ্বিতীয় পর্বে জয়ী হওয়া কঠিন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নির্বাচনে যে জয়লাভ করবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাকে সরকার গঠন করতে হবে। আর এ কারণে দুই প্রার্থীই ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে এক নম্বর ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের জীবন নির্বাহের ব্যয়। অতি-দক্ষিণপন্থী নেতা মারিন লা পেনও তার প্রচারণায় এই বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু তার অন্যান্য বড় ধরনের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সামাজিক আবাসন, ফরাসি নাগরিকদের জন্য তাদের চাকরি ও সামাজিক কল্যাণকে ‘জাতীয় অগ্রাধিকার’ দেওয়া এবং ইসলামিজমের বিরুদ্ধে লড়াই।
তিনি তার সমর্থকদের বলছেন, এর আগে তারা কখনো এবারের মতো বিজয়ের এত কাছাকাছি যেতে পারেননি। অন্যদিকে, মধ্যপন্থী নেতা বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁন ভোটারদেরকে ‘আমরা সবাই’ এই স্লোগানের মধ্যে নিয়ে আসতে চাইছেন।