কুলাউড়ায় এমপির বরাদ্দকৃত জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে ৭টি ইউনিয়নের ২৮ লক্ষ টাকার রাস্তার কাজ অনিশ্চয়তার মুখে
স্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে ১২টি ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত ৫০ লক্ষ টাকার গ্রামীণ অবকাঠামো ইটসলিং রাস্তারকাজের মধ্যে প্রায় ৫টি ইউনিয়নের কাজ সম্পন্ন হলেও বাকি অবশিষ্ট ৭টি ইউনিয়নের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
জানা যায়, মৌলভীবাজার ২-আসনের এমপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের ডিও লেটারের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে এডিপির আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। গৃহীত প্রকল্পের মধ্যে বরমচাল ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্রাম্মনবাজার-বরমচাল পাকা রাস্তা হতে ৭নং ওয়ার্ডে হযরত শাহকালা মাজারের উভয় সাইট দিয়ে কালিয়া আগার রোড ইট সলিং কাজ, ব্রাম্মনবাজার ইউনিয়নে ৫লক্ষ টাকা ব্যয়ে পশ্চিম জালালাবাদ ইটসলিং রাস্তার মুখ হতে পশ্চিমমুখি রাস্তার ইট সলিং এর কাজ, পৃথিমপাশা ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মরহুম আলী ছত্তর রাস্তা হতে রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয় হতে পশ্চিমমুখি ইউসুফ সদর রাস্তা ইট সলিং এর কাজ, কর্মধা ইউনিয়নে ৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে বাবনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ রাস্তা হতে পূর্বমুখি আব্দুল মালিক মাষ্টারের বাড়ির সম্মুখ পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ।
অপরদিকে কুলাউড়া সদর ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শংকরপুর মন্দির হতে পূর্বমুখী পূর্ব প্রতাবী খানকা শরীফের সম্মুখ পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলে এখানে মাত্র ১৫০ ফুট ইট সলিংয়ের কাজ হয়েছে। এই নিয়ে কুলাউড়া উপজেলায় প্রায় ৫টি ইনিয়নের ইট সলিং এর কাজ সম্পন্ন হলেও উক্ত প্রকল্পের বাকি ৭টি ইউনিয়নে যথাক্রমে ভুকশিমইল ইউনিয়নে ৪ লাখ টাকাব্যয়ে পূষাইনগর থেকে নবাবগঞ্জ ভুকশিমইল ৫নং ওর্যাড মালিক মিয়ার বাড়ির রাস্তা হতে চক মসজিদ রাস্তা ইটসলিংয়ের কাজ, ভাটেরা ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভাটেরা ইউপি সম্মুখ থেকে পূর্বমুখী কৃষ্ণপুর রাস্তা ইটসলিংয়ের কাজ, জয়চন্ডি ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে রামপাশা উত্তর মসজিদ সংলগ্ন উত্তরমুখী রাজারবাড়ি ভায়া আবু তালিবপুর রাস্তার ইটসলিংএর কাজ, কাদিপুর ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বামপাশের কাঁচা রাস্তার মুখ হতে উচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সম্মুখ হতে কৌলারশির রাস্তার মুখ পর্যন্ত কাজ , রাউৎগাও ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কুলাউড়া-রবিরবাজার রাস্তা হতে পূবমুখী ২নং ওয়ার্ডে আব্দুলপুর গ্রাম হতে চৌধুরীবাজার কালিটি রাস্তা পর্যন্ত ইটসলিং এর কাজ , টিলাগাঁও ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩নং ওয়ার্ড মোবারকপুর নতুন মসজিদের সস্মুখ পিচ রাস্তার মুখ পর্যন্ত ইট সলিং এর কাজ এবং হাজিপুর ইউনিয়নে ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাইকপাড়া সুলতানপুর উত্তরমুখী হয়ে চক রনচাপ ভায়া ইসমাইলপুর পূর্ব পর্যন্ত রাস্তা ইট সলিং এর কাজ শুরু হয়নি। উক্ত ৭টি ইউনিয়নে ২৮ লক্ষ টাকার গ্রামীণ অবকাঠামোর ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপির আওতায় প্রকল্পের কাজ চলতি অর্থ বছরের জুনের মধ্যে শুরু বা কাজ শেষ না হলে উক্ত প্রকল্পটি অনিশ্চয়তায় মধ্যে পড়বে। এমনকি বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত বা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ না করে টাকা উত্তোলন করার সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণ। এ নিয়ে উক্ত ৭টি ইউনিয়নে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার রাস্তাগুলোর কাজ শুরু না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন গুলোর এলাকাবাসীদের মধ্যে মোঃ আব্দুল রহিম, জসিম উদ্দিন, আব্দুল আলী, মছদ্দর আলী, আইয়ুব আলী, সিরাজ মিয়া,সুলতান আহমদ,নারগিস আক্তার ও পারভিন বেগম ক্ষোভের সহিত তারা প্রত্যেকে জানান, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী এই রাস্তা গুলো উন্নয়নের জন্য আমরা এমপির কাছে আবেদন করে উনার ডিও লেটারের মাধ্যমে এডিপির আওতায় জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে এই প্রকল্পের ইট সলিংয়ের কাজ বরাদ্দ পাওয়া হয়। যথাসময়ে কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এখনো উক্ত ইউনিয়ন গুলোর রাস্তার কাজ শুরু করেনি। আমরা মাননীয় সাংসদ সুলতান মনসুর এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিছবাউর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রকৌশলীর কাছে দাবি জানাচ্ছি এ বিষয়টির উপর নজর দেয়ার জন্য।
জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ মৌলভীবাজার-২ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বাংলা কাগজকে জানান – আমি ১৯ জুন ২০২১ গৃহীত প্রকল্পের তালিকা জেলা পরিষদকে হস্তান্তরের মাধ্যমে যথা সময়ে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য আহবান জানাই। যথা সময়ে কেন প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়নি এ বিষয়ে জেলা পরিষদই বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান টেলিফোনে এই প্রতিবেদককে জানান, রাস্তাগুলোর কাজ শুরু করার জন্য বার বার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে তাগদা দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান কাজ না করে বিল তোলার কোন সুযোগ নেই এবং টাকা ফেরতও যাবে না। তাগাদা দেয়ার পরও যদি কাজ শুরু না করে তা হলে ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি ।