তীব্র শীতের মধ্যেও হাওড় পাহাড় শিল্পশহর ও গ্রাম অধ্যুষিত হবিগঞ্জে জমে উঠেছিলো পৌষ সংক্রান্তির উৎসব। কেবল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নয়, সাধারণ কৃষক পরিবারও দুইদিন ধরে নানা আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে জেলার পাহাড়ি এলাকা ও বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি বাড়ি নারীরা হরেক রকমের পিঠা তৈরি করেছেন। বিবাহিত নারীরা সংক্রান্তি উপলক্ষে ফিরে এসেছেন পিত্রালয়ে। এছাড়া প্রতিটি পরিবারের কিশোর-কিশোরীরা ব্যস্ত নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে।
এ উপলক্ষে জমজমাট মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয় বাহুবলের মিরপুরে। মেলায় মৎস্য শিকারিরা নিয়ে আসেন বিভিন্ন জাতের বড় বড় মাছ। স্থানীয়রা ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সৌখিন লোকেরা এখানে আসেন মাছ ক্রয় করতে।
এছাড়াও জেলার আজমিরীগঞ্জ এবং বানিয়াচংসহ বিভিন্নস্থানে একাধিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।জেলার বাহুবলের বাসিন্দা সাংবাদিক ও শিক্ষক পঙ্কজ কান্তি গোপ বলেন, পৌষ সংক্রান্তিতে তার পরিবারের সবার মাঝে ছিলো উৎসবের আমেজ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নারীরা। তাছাড়া বিভিন্ন স্থান থেকে আত্মীয়-স্বজন এসেছেন পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে। তাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে।সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা জানান, তাদের পল্লীতেও পালিত হয়েছে পৌষ সংক্রান্তি। উৎসবটিকে পৌষ সংক্রান্তি ছাড়াও মকর সংক্রান্তি, দধি সংক্রান্তি এবং বিশেষভাবে উত্তরায়ণ সংক্রান্তি নামে অভিহিত করা হয়। এইদিন পরিবারের সবাই বিশেষ করে শিশুরা নতুন জামা-কাপড় পরে।
তিনি বলেন, পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে ছেলে-যুবারা গ্রামে গ্রামে ‘ভেড়াঘর উৎসব’ উদযাপন করে। খড় ও বাঁশ দিয়ে বিশেষ ধরনের ঘর তৈরি করে এতে রাত্রিযাপন করে তারা। পুরো রাত এই ঘরেই চলে খাওয়া-দাওয়া। পরদিন ভোরে শীতল জলে স্নান সেরে আগুন দিয়ে ঘরটিকে পুড়িয়ে ফেলা হয়।