বিদ্যালয়ের পোশাক পরে টিকটক ভিডিও করার অভিযোগে নাটোর সদর উপজেলার চন্দ্রকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে শনিবার (২৮ মে) বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রোববার (২৯ মে) স্কুলে ভাঙচুর চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা খাতুন ও চন্দ্রকলা এসআই উচ্চ বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান শাহ জানান, শনিবার (২৮ মে) বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বুলবুল আহমেদ নবম শ্রেণির তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে টিকটক করার অভিযোগ এনে তাদের স্কুল থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেন।
এরপর তাদের স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ঘটনাটি রোববার সকালে স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে জানতে পারে। পরে কিছু শিক্ষার্থী বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে তাদের হাতেও বিদ্যালয়ের ছাড়পত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে স্কুল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অন্য শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে স্কুলের জানালাসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। একই সঙ্গে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করতে থাকে।
চন্দ্রকলা এসআই উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বুলবুল আহমেদ বলেন, নবন শ্রেণির তিনজন শিক্ষার্থী কমেডি টিকটক তৈরি করে ফেসবুকে আপলোড করে থাকে। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিরক্ত বোধ করে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তাদের অভিভাবকদের একাধিক বার সতর্ক করা হয়েছে। এমনকি তাদের অভিভাবকেরা এ সব ঘটনার পর অঙ্গীকারনামাও দিয়েছেন। তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই তিন শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আবুল কালাম আজাদ বলেন, চন্দ্রকলা এসআই উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা শোনার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তাদের মুচলেকা নেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়নি।
এ ব্যাপারে নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা প্রাপ্তবয়স্ক না। তাদের বহিষ্কার না করে অভিভাবকদের ডেকে সতর্ক করা উচিত ছিল।
এদিকে বহিষ্কার হওয়া এক ছাত্রের পরিবার থেকে দাবি করা হয়, গান করার ভিডিও ফেসবুকে দেয়া হয়েছিল। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের না জানিয়ে বহিষ্কার করা হয়। বছরের মাঝামাঝি সময় হওয়ায় তাদের নতুন করে অন্য বিদ্যালয়ে ভর্তি করে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ না থাকায় তাদের শিক্ষা জীবন থেকে একটি বছর ঝরে যাবে বলে দাবি করা হয়।