দীর্ঘসময় ধরে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টিকারী পন্ডিত সুদর্শন দাশকে সিলেটে সংবর্ধনা
বীর চট্টলার কৃতি সন্তান, যুক্তরাজ্য প্রবাসি, বিশিষ্ট তবলাবাদক ব্যারিস্টার পন্ডিত সুদর্শন দাশ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ৫তম গিনেজ ওয়ার্ল্ডের রেকর্ড অর্জন করায় সিলেট-চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশীপ ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭.৩০ ঘটিকায় কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, দরগাহ গেইট, সিলেটে ব্যারিস্টার পন্ডিত সুদর্শন দাশকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
উক্ত আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী (নাদেল)
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রাহাত তরফদার ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি রাহনামা সাব্বির চৌধুরী (মনি)।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট সম্মিলিত নাট্য সিলেটের সাধারণ সম্পদক বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সিলেট মহানগর’র সাংস্কৃতিক সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত ,সিলেট মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগ’র সাংগঠনিক সম্পাদক নার্গিস সুলতানা রুমি, চট্টগ্রাম সমিতি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট বিশ্বনাথ ঘোষ , বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সিলেট মহানগর’র সভাপতি কিশওয়ার জাহান সৌরভ।
অনুষ্ঠানে শুরুতেই বৈশ্বিক মহামারী করোনা কালীন সময়ে যাঁরা প্রয়াত হয়েছেন সকলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে ১ মিনিট নিরবতা পালনের মধ্যদিয়ে সিলেট-চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশীপ ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক শহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে, যুগ্ম আহবায়ক উৎফল বড়ুয়ার স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা হয়।
উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল আলিম আলম, আবুল বশর, কয়েছ আহমদ, সিনিয়র সদস্য সুলতানা জান্নাত, শেলু বড়ুয়া, রুনা বড়ুয়া, সদস্য আব্দুল মালেক, মোঃ শাকিল মিয়া, শাহ আলম জার্নেল প্রমুখ।
সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিলেট চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশীপ ফাউন্ডশনের যুগ্ম আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার রানা বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, পন্ডিত সুর্দশন বাংলার গর্ব। তবলা ও পড়ালেখার প্রতি তার অধ্যাবসায় তাকে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর লন্ডনে একটানা ১৬ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে ড্রাম বাজিয়ে বিশ্বের দীর্ঘসময় ধরে বাদ্যযন্ত্র বাজানোর রেকর্ডটি গড়েন তিনি। এর আগে ২০১৬ সালে লংগেস্ট তবলা ম্যারাথনে টানা ৫৫৭ ঘণ্টা ১১ মিনিট তবলা বাজিয়ে প্রথম রেকর্ডটি গড়েন তিনি।
এরপর ২০১৭ সালে টানা ২৭ ঘণ্টা ঢোল বাজিয়ে, ২০১৮ সালে টানা ১৪ ঘন্টা ড্রাম বাজিয়ে মোট পাঁচটি বিশ্বরেকর্ড ঝুলিতে ভরেন চট্টগ্রামের এই কৃতি সন্তান।
সুদর্শন দাশের পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নে। তবে তার জন্ম চট্টগ্রাম নগরীর ফিরিঙ্গিবাজারে। পণ্ডিত সুদর্শন যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমির অধ্যক্ষ।
তার প্রতিষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা বাদ্যযন্ত্রে তাল তোলার কসরত শেখেন। পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস, নিউহ্যাম এবং রেড ব্রিজ কাউন্সিলের অধীনে তিনি স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ‘মিউজিক ইন্সপেক্টর’ হিসেবে কাজ করেন।
চট্টগ্রামের আলাউদ্দিন ললিতকলা একাডেমিতে সুদর্শনের তবলায় হাতেখড়ি হয় চার বছর বয়সে। ১৯৯০ সালে ফুলকুঁড়ি আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক পাওয়ার দুই বছরের মাথায় শান্তিনিকেতনে যান পণ্ডিত বিজন বিহারি চ্যাটার্জির কাছে প্রশিক্ষণ নিতে। সেখানেই ১৯৯৮ সালে মেলে ‘তবলাবিশারদ’ উপাধি।
পরে আইন পড়তে লন্ডন গেলেও তবলার নেশা তাকে ছাড়েনি। ২০০৪ সালে নিউহ্যাম এলাকায় ‘তবলা অ্যান্ড ঢোল একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করেন সুদর্শন। ২০১১ সালে তার ‘লার্ন টু প্লে তবলা’ ডিভিডি আকারে প্রকাশিত হয়। দুই বছর পর বাজারে আসে ‘লার্ন টু প্লে তবলা উইথ মিউজিক’।
চ্যানেল ফোর, বিবিসি টেলিভিশন, স্কাই টিভি ও ব্রাজিলের ফিনিক্স টেলিভিশনে তবলা বাজানো সুদর্শনের রয়েছে ১০০টির বেশি কনসার্ট ও পুরস্কার বিতরণীতে বাজানোর অভিজ্ঞতা।
সংবর্ধীত অতিথি ব্যারিস্টার পন্ডিত সুদর্শন দাশ সিলেটে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্টানটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব বর্ষকে উৎসর্গ করেন এবং বাংলাদেশের জন্য যেন আরো অর্জন বয়ে আনতে পারেন সকলের প্রতি দোয়া চান।