আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে জাতীয় পার্টি নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট আয়োজিত জাতীয় হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
জিএম কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টি এখন জোটে নেই। কাজেই জোটে থাকা না থাকার কোনো প্রশ্নও নেই। আমরা যেদিন থেকে বিরোধী দল হিসেবে কাজ করছি, সেদিন থেকেই আমরা আর আওয়ামী লীগে নেই, জোটে নেই।’
তিনি বলেন, ‘একসময় আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম, একসঙ্গে নির্বাচন করেছি। আমাদের জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করেছেন, আমরাও তাদের জন্য কাজ করেছি। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, এখনও কিছুটা আছে। তাই তাদের ভালো কাজের প্রশংসা করেছি। এখন জনগণের স্বার্থে যদি তারা কাজ না করে তাহলে কেন আমরা তাদের সাথে থাকব?’
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের বলেন, ‘আমরা সব সময় দেশ ও জনগণের পক্ষে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ যদি সত্যিকার অর্থে ভালো কাজ করে, তাহলেই আমরা তাদের সঙ্গে থাকব, যেমনটি ছিলাম। আর যদি আমরা তাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলি, জনগণ যদি তাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে, তবে আমরা ভবিষ্যতে তাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি।’
ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, দাবি করে জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ইভিএমের মাধ্যমে সেটা সম্ভব নয়। ইভিএম হলে এটা কারচুপির নির্বাচন হবে, সরকার যাকে চাইবে তাকেই পাস করিয়ে দিতে পারবে। ইভিএম হলো শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন। আমরা মনে করি, ইভিএমের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচন হবে না।’
এই নির্বাচন কশিনের অধীনে নির্বাচন নিয়ে জিএম কাদের বলেন, ‘এই অবস্থায় আমরা নির্বাচন করব, নাকি বর্জন করব, কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দিক পর্যালোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর জনগণের কথা ভাবতে হলে আমাদের সামনের দিকে এগোতেই হবে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো সমস্যা নেই, এই কথাটা আংশিক সত্য। যারা বড় পর্যায়ে পৌঁছেছেন তাদের হয়তো সমস্যা কম, তবে গ্রামে যেসব হিন্দু বসবাস করেন, তারা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের জমি দখলের চেষ্টা করেন।’
জাতীয় হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবান্দ চন্দ্র প্রামাণিক, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, যুগ্ম মহাসচিব সুজন দে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী।
সমাবেশে হিন্দুদের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন এবং সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানানো হয়। এছাড়া, রথযাত্রা উৎসবে সরকারি ছুটির ঘোষণার দাবি জানান বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা।