সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনরত এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অসুস্থ হওয়া শিক্ষার্থীর নাম কাজল দাশ। ওই শিক্ষার্থী বুধবার বিকেল ৩টা থেকে ২৪ জনের সঙ্গে অনশনে অংশ নেন।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা পানিসহ কোনো ধরনের তরল খাদ্য গ্রহণ করছেন না। যার ফলে অনেকেই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছেন। তবে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কেউ অনশন ভাঙবেন না। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১টা পর্যন্ত ২২ ঘণ্টার মত চলছে অনশন।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনের পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে বুধবার রাত পৌনে নয়টায় প্রায় দুই শতাধিকের বেশি শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি দল কর্মসূচিস্থলে উপস্থিত হন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থেকে চেষ্টা চালান। তিন ঘণ্টার চেষ্টায় কোনো কথা বলারই সুযোগ পায়নি শিক্ষকরা। এমনকি রিকশাযোগে নিয়ে আসা শিক্ষকদের মাইকও কর্মসূচিস্থলে প্রবেশ করতে দেয়নি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কথা বলতে চাইলে তারা শর্ত জুড়ে দেন। আন্দোলনে সমর্থন আছে কি না জানতে চেয়ে মুহুর্মুহু ‘ইয়েস অর নো’ স্লোগান দিতে থাকেন। তারপরই তারা এ দুটি শব্দের একটি ছাড়া আর কোনো কথা না শুনতে স্লোগান দিতে থাকেন।
অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষকরা হ্যান্ড মাইক দিয়ে বার বার কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্লোগানের আওয়াজে তাদের কথা অস্পষ্ট হয়ে যায়। পরে বাধ্য হয়ে কর্মসূচিস্থল ত্যাগ করেন শিক্ষকরা।
অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এসেছিলাম আমাদের শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে। তাদের কাছে সে সময়টুকু চেয়েছি যেন এ ঘটনার পেছনে কারা জড়িত সেটা খুঁজে বের করতে পারি।
শিক্ষার্থীরা বলছে, উপাচার্যের নির্দেশে হামলা হয়েছে। তদন্তে যে দোষী হবে সে দায় নেবে। আমরা চাই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক। সরকার ও সিলেটের নেতৃবৃন্দ এখানে সম্পৃক্ত। যার নির্দেশে হামলা হয়েছে সেখানে উপাচার্যসহ যেই জড়িত থাকুক তাকে দায় নিতে হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের ওই সুযোগটা দেয়নি বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাদের বুঝাতে আবার চেষ্টা করব। তা না হলে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।