প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানিমুক্ত দ্রুত সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকদের আরও যত্নশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অধিবেশন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা খুব ভাগ্যবান যে, ২০২১ সাল আমাদের জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিলো। সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক কাজ করেছে। আমরা মুজিব চিরন্তন করেছি, ২৩৬টি দেশের রাষ্ট্র প্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মেসেজ নিয়ে এসেছি যেগুলো আমাদের জন্য ভালো খবর।
‘আমরা বিশ্ব শান্তি সম্মেলন করেছি। আমরা ইউনেসকো বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ অ্যাওয়ার্ড শুরু করেছি। এরকম অনেক কিছু করেছি। ফলে সারা পৃথিবী আমাদের সাফল্যের জন্য প্রশংসা করেছে।”
তিনি বলেন, ‘আমাদের সুখবর হলো- আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণ করেছি। এর সাথে কিছু চ্যালেঞ্জও আমাদের রয়েছে। সেজন্য এলডিসির চলমান সুবিধা পেতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেন দরবার করে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এছাড়া টেকনোলজিখাতে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত সুযোগ সুবিধা বলবৎ থাকবে। এগুলো আমাদের জন্য সুখবর।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সুখবরের পাশাপাশি আমাদের কিছু দুঃখও আছে। আমাদের প্রায় এক কোটির বেশি প্রবাসী রয়েছে। তাদের কিছু অভিযোগ আছে যে, তারা সঠিক সময়ে পাসপোর্ট পান না। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হয় না। দেশে এলে হয়রানির শিকার হতে হয়। অনেক সময় তাদের ভূমি বেদখল হয়ে যায়। সময় মতো তারা ম্যারেজ সার্টিফিকেট, বার্থসাটিফিকেট পান না। বিদেশে মারা গেলে ডেড বডি আনতে তথ্য পাওয়া যায় না। এ ধরনের একাধিক অভিযোগ তাদের আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো পাসপোর্ট বা এনআইডি দেই না। তবে এগুলো সংগ্রহ করে বিদেশে পাঠাই। সেগুলো যেতে অনেক সময় এতো দেরি হয়। তাতে প্রবাসীরা অসন্তুষ্ট হয়। সেক্ষেত্রে আমরা আশা করবো জেলা প্রশাসকরা এক্ষেত্রে আরও যত্নশীল হবেন। যেন এসব সেবা আরও ত্বরান্বিত হয়। তাদেরকে হয়রানিমুক্ত সাহায্য সহায়তা দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী বা নির্বাচিত প্রতিনিধি বা সংসদ সদস্যরা বা স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারি অফিসে প্রবাসীদের সম্মান দেওয়া হয় না। যেহেতু তারা নির্বাচিত এবং জনগণের কাছে কমিটমেন্ট করেছেন, সে বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয় না। সেসব বিষয়ে আরও যত্নশীল হতে হবে। দুঃখজনক যে, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ হয় না। সেজন্য আমরা বলেছি এদেশের বড় সম্পদ হচ্ছে প্রাণি এবং মানুষ। এই মানুষগুলোকে কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটু মনোযোগ দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন যেগুলো নিজেরাই করতে পারেন, অনেক সময় সেগুলো তারা ঢাকায় পাঠিয়ে দেন এবং নিজের দায়িত্বটা এড়িয়ে যান। এরফলে সবাই ঢাকাকেন্দ্রিক হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা সজাগ হবেন। যেগুলো তাদের করা উচিৎ সেগুলো তারা স্থানীয়ভাবে সমাধান করবেন।’