ঢাকায় কাজ শেষে বগুড়ার সোনাতলা থানায় ফেরার পথে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে ওয়াকিটকি, দুইটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
এঘটনায় বুধবার (১২ অক্টোবর) রাত ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার পরে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার করা এবং ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ১১ টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বগুড়ার সোনাতলা থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল খালেক মামলাটি দায়ের করেছেন।
এর আগে, বুধবার রাত আড়াইটার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সদর উপজেলার সদানন্দপুর কড্ডা এলাকায় এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
বগুড়া সোনাতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈকত হাসান জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনাতলা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী অপহৃত হয়। পরে ছাত্রীর বাবা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে পুলিশ ও পরিবার ওই ছাত্রীর সন্ধান করছিলো। গত সোমবার ছাত্রীর পরিবার জানতে পারে, মেয়েটি ঢাকায় অবস্থান করছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সোনাতলা থানা পুলিশ ঢাকায় উদ্ধার অভিযানে যায়। সোনাতলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল খালেক ও কনস্টেবল আবুল কালাম এই অভিযানে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে ছাত্রীর বাবা ও চাচা ছিলেন। ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে রাতেই তারা সোনাতলার উদ্দেশে রওনা হন। তারা যমুনা সেতু পার হয়ে সদানন্দপুর কড্ডা এলাকায় পৌঁছলে সড়কের পেছন থেকে তাদের মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙ্গে পাথরটি ওই ছাত্রীর চাচার মাথায় লাগে। তার চিৎকারে চালক গাড়ি থামিয়ে দেয়। এসময় ৭-৮ জন ছিনতাইকারী তাদের ঘিরে ধরে। গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাদা পোশাকে থাকায় তাদের পরিচয় দিলেও ছিনতাইকারী দল তা বিশ্বাস করেনি।
ওসি বলেন, ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে তাদের কাছ থেকে একটি ওয়াকিটকি, দুইটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকাসহ মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এসময় কনস্টেবল কালাম হোসেন তাদের বাধা দিলে মাথায় ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। আহত কনস্টেবল এবং অপহৃত ছাত্রীর চাচাকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা দুইজন সুস্থ রয়েছে।
বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, মহাসড়কে পুলিশের গাড়িতে ছিনতাইয়ের বিষয়টি জানার পর বগুড়া থেকে ডিবি পুলিশ ও সোনাতলা থানা পুলিশ সিরাজগঞ্জে অভিযান চালাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকায় অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। রাতে মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থানার পুলিশের টহল থাকার কথা। এতে কারও দায়িত্বে অবহেলা আছে কি না সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।