জগন্নাথপুর প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন কার্যক্রম এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে।ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরবাসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন ফি বাবদ প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার বিল বকেয়া থাকায় কেন্দ্রীয় ভাবে পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সার্ভার সমস্যা থাকায় গত ২-৩ দিন ধরে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রমে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
ভুক্তভোগিরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম হচ্ছে না।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারে ক্রুটি দেখা দিয়েছে। এজন্য কাজ করা যাচ্ছে না। সার্ভারের সমস্যা সমাধান হলে আসবেন। তবে, কবে এ জটিলতা নিরসন হবে তা জানানো হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন লোকজন পৌরসভার আসা যাওয়া পালায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, অনেকেই নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন এবং শিক্ষার্থীদের বাংলা থেকে ইংরেজি জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন।
ভুক্তভোগি পৌরশহরের ইকড়ছই এলাকার বাসিন্দা
শামিনুর রহমান বলেন, গত ১৫ নভেম্বর আমার ভাতিজির জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করি। পরে পৌরসভা থেকে বলা হয়, উপজেলায় গিয়ে আবেদনটি অনুমোদন করিয়ে আনার জন্য। উপজেলা যাওয়ার পর তাঁরা বলেন, পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সার্ভার বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে পৌরসভা ও উপজেলায় ছুটতে ছুটতে হাপিয়ে গেছি।
ওই ভুক্তভোগি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছ থেকে তো পৌরসভার কর্তৃপক্ষ টাকা কম নেন না বরং বেশিই নিয়ে থাকেন। তাহলে এখন তাদের বকেয়ার জন্য আমাদের কেনও ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে?
আরেক ভুক্তভোগি জগন্নাথপুর এলাকার
বাদশা মিয়া জানান, গত সোমবার আমার দুই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ করাতে পৌরসভা গিয়ে ছিলাম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন সার্ভারের সমস্য হচ্ছে এজন্য জন্ম নিবন্ধন হবে না। আমাকে পরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। এরআগে ৩-৪ দিন পৌরসভায় গিয়েও আমার কাজ হয়নি। ফলে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি।
জগন্নাথপুর পৌরসভার সচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, জন্ম নিবন্ধনের সার্ভারে সমস্যা দেখা দেয়ায় জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ সমস্যা গত দুই দিন ধরে চলছে বলে তিনি জানান।
জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। তবে জন্ম সংশোধন আবেদনের জন্য আমরা জগন্নাথপুরের ইউএনও কার্যালয়ে পাঠালে তাঁরা কাজ করছেন না। আমাদের কোন বকেয়া নেই।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন কার্যক্রম ফি বাবদ ১০ লাখ ৩২ হাজার ৯২৬ টাকা বকেয়া রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় ভাবে তাদের সংশোধনী সার্ভার বন্ধ রয়েছে। তবে এখন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার অধীনে যে সকল পৌরসভা রয়েছে সেগুলোর সংশোধনী আবেদন জেলার স্থানীয় সরকার অতিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) অনুমোদন করবেন।
সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকার অতিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং বকেয়া বিল পৌরসভাকেই পরিশোধ করতে হবে।