হাড়কাঁপানো শীতে রাতের পর রাত খোলা আকাশের নিচে শাবিপবি’র শিক্ষার্থীদের মানবেতর অবস্থা দেখে বিবেকের তাড়নায় কিবোর্ডে চেপে বসলো আংগুল। বিভিন্ন কারণে আমার মতো অনেক এখনও নীরবতা পালন করছেন, কিন্তু আমার আর সহ্য হয় নি ! অবশেষে আমাকে নীরবতা ভাংতেই হলো!
সরাসরি মূল কথায় আসি। যেসব দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল তাদের সবক’টির সংগে ভিসি মহোদয় একমত পোষণ করা বা দাবি পূরণ করার চেয়ে জরুরি ছিল অভিভাবক হিসেবে পিতৃত্বের স্নেহে তাদেরকে শান্ত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করা। কিন্তু তিনি এক্ষেত্রে যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন তার প্রমাণ সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে সরব ক্যাম্পাসকে নীরব করে দেওয়ার জঘন্য চেষ্টা ! এতে সচল ক্যাম্পাস শুধু অচলই হয়েছে, সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি, বরং অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে । ন্যক্কারজনক এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হাজারো শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাপনের কাপড় পরে যে ২৪ জন শিক্ষার্থী ( এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ ঘণ্টা হয়ে গেলো! ) আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতি শুধু সহমর্মিতা না জানিয়ে এদের জীবন বাঁচাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে প্রধানত দুটি পথ খোলা রয়েছে :
১। ভার্চুয়াল জগত লক্ষ্য করলে জনজরিপে স্পষ্ট যে, ন্যায্যতা হারানোর কারণে ভিসি মহোদয়ের পদত্যাগের ব্যাপারে একাট্টা সিলেট ! সরব সবাই ! সারা বাংলাদেশ ! সুতরাং জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আপনি এখনই পদত্যাগ করুন । সন্তানতুল্য অনশনরত একজন শিক্ষার্থীর পিতা ইতোমধ্যে হার্ট অ্যাটাক করেছেন – এটা জানার পরও আপনি কীভাবে স্বপদে বসে আছেন? আপনার পদত্যাগের দাবিতে আপনার শিক্ষার্থী হামিদ আব্বাসিরা যখন হাসপাতালের বেডে থেকেও মুখে কিছু না খাওয়ার কারণে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়ে ঝরে যাচ্ছে তখনও আপনি সরে যাচ্ছেন না কেন?
২। শাবিপ্রবির বর্তমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকার মহাশয়কে শিক্ষার্থীদের মানবেতর অবস্থা ও মনের ভাষা বুঝে তড়িত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সরকার ভিসি মহোদয়কে সুদক্ষ ও সুযোগ্য মনে করে থাকলে তাঁকে অন্য কোথাও আরও বড় পদমর্যাদা সম্পন্ন চেয়ারে সরিয়ে দিয়ে হযরত শাহজালাল (রহ.) -এর পুণ্যভূমিতে তাঁরই নামে গড়ে ওঠা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দিন, প্লিজ ।
সুতরাং উপাচার্য নিজে সরে গিয়ে অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় আচার্য এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতির একটি আদেশের মাধ্যমে তাঁকে সরিয়ে দিয়ে স্বরূপে ফিরিয়ে দিতে পারেন দেশসেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়েকে।