আগামী প্রজন্মকে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ জনবল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের মুখস্ত বিদ্যার পরিবর্তে তাদের মেধা বিকশিত হবে।’
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে এসব পাঠ্যপুস্তক বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের ছেলে-মেয়েদের এমনভাবে গড়ে তুলবো যাতে প্রযুক্তির সঙ্গে উপযুক্ত জনবল হিসেবে গড়ে ওঠে। শিক্ষার্থীদের মুখস্ত বিদ্যার পরিবর্তে তাদের মেধার বিকশিত করতে চাই।
জাতির পিতা শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তার কনা শেখ হাসিনা বলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কুদরত এ খুদাকে দিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন। এরপর যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা নিরক্ষরতা দূরীকরণে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ’৯৬ তে ক্ষমতায় এসে আমরা নতুন করে শিক্ষা কমিশন গঠন করি এবং স্বাক্ষরতার হার বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।
তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের সময়ে শিক্ষার কোনো পরিবেশ ছিলো না। ১৯৯৬ সালে আমরা সরকারের এসে স্বাক্ষরতার হার পেয়েছি ৪৩ শতাংশ, ২০০১ সালে আমরা তা ৬৫ শতাংশের উন্নীত করি। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি স্বাক্ষরতার হার৫০ শতাংশে নামিয়ে এনেছিলো।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সাল থেকে প্রাক-প্রাথমিক হতে মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে প্রতি বছর পয়লা জানুযারি বিনামুল্যে নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তখন থেকে বই উৎসব পালিত হচ্ছে। ২০২৩ সালে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ১৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮২৩ জন শিক্ষার্থীকে ৯ কোটি ৬৬ লাখ ০৮ হাজার ২৪৫টি বই বিতরণ করা হবে। এ বছরে মোট ৪ কোটি ০৯ লক্ষ্য ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৯১ লক্ষ্য ১২ হাজার ৩০০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
বর্তমানে প্রায় ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে যায় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, অভিভাবকদের মাঝেও সচেতনতা এসেছে।
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৪১ সালের বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। এখন আর কেউ বাংলাদেশকে কেউ নিচু করে দেখতে পারবে না।
তিনি বলেন, আন্তরিকতার সাথে যদি আমরা ছেলে-মেয়েদের তৈরি করতে পারি তাহলে আমাদের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। যদিও এতো কাজ করার পরওে কিছু লোকের মন করবে না। তারপরও বলবে কিছুই করি নাই। তারা চোখ থাকতে অন্ধ। তারা দেখবে না। তাদের মাথার মধ্যে নাই শব্দটা ঢুকে গেছে। আমমরা নাই নাই শুনবো না। আমরা করতে পারবো এবং বাংলাদেশ পারে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এগিয়ে যাবে।’
এ সময় করোনা থেকে সতর্ক থাকতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি। একই সঙ্গে সবাইকে করোনার বুস্টার ডোজ নেওয়ার আহ্বান জানান।