জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
প্রতিনিধি – সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের এক যুবক লিবিয়াতে গিয়ে মাফিয়া চক্রের নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের মাতন চলছে।
পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, পরিবারের স্বচ্ছলতা আনতে দালালদের মাধ্যমে পৈতৃক ভিটামাটি বিক্রি করে চার লাখ টাকা দিয়ে লিবিয়া গিয়েছিলেন সাহাদ আলী(৩০) নামের ওই যুবক। স্বপ্ন ছিল সেখানে আয় রোজকার করে ইটালি গিয়ে অসচ্ছল পরিবারের স্বচ্ছলতা আনবেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে মাফিয়া চক্রের কবলে পড়ে তাদের কথামতো টাকা দিতে না পেরে নির্যাতনে মৃত্যুরকোলে ঢলে পড়েন। শনিবার লিবিয়াতে মৃত্যু হয় সাহাদ আলীর। তিনি এ গ্রামের কৃষক মৃত তবারক আলী ও গৃহিনী হাজেরা বিবি দম্পতির ছোট ছেলে।
২০২২ সালের ২১ মে চার লাখ টাকা দিয়ে উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের পাড়ারগাঁও গ্রামের দালাল শাহীনের মাধ্যমে লিবিয়া যায় সাহাদ আলী । সেখানে পরিচয় হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দালাল সাদ্দামের সঙ্গে। ওই বছরের নভেম্বর মাসে সাদ্দাম তাকে মাফিয়া চক্রের হাতে তুলে দেন । তখন মাফিয়া চক্র তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপন চায়।
সাহাদ আলীর বোন সেবিকা বেগম জানান,আমরা মুক্তিপনের টাকা দিতে না পারায় আমার ভাই কে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়।দিনের পর দিন অনাহারে রাখা হয়। আমরা দালাল সাদ্দামের মাধ্যমে মাফিয়া চক্রের সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করে ভিক্ষা চেয়ে টাকা পাঠিয়েও বাঁচাতে পারলাম না। আমার ভাই কে হত্যা করা হচ্ছে।
সাহাদ আলীর ভাই সজ্জাদ মিয়া জানান, দালাল শাহীন ও সাদ্দাম দেশে ব্যাংকে তাদের স্বহনদের মাধ্যমে টাকা নিয়েছে। টাকা নিয়েও আমার ভাই কে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।
বনগাঁও গ্রামের তরুণ ইমাদ উদ্দিন আকাশ জানান,মাফিয়া চক্রের হাতে নির্যাতনের খবর পেয়ে আমরা এলাকার লোকজন দরিদ্র পরিবারের এ ছেলেকে বাঁচাতে চাঁদা তুলে আরও দেড় লাখ টাকা পাঠাই। এরপরও মাফিয়া চক্র তাকে বাঁচতে দিল না।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক।পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হবে।