ফুল সৌন্দর্য ও প্রবিত্রতার প্রতিক ।ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুব কম পাওয়া যাবে।বরং ফুলের সৌন্দর্য দেখে মনের মধ্যে ভালো লাগার কাজ করে বিধায় ফুল মানুষের মনকে সতেজ করে। যার ফলশ্রুতিতে স্কুল জীবন থেকে টিফিনের পয়সা সঞ্চয় করে অনেকেই শিশু বয়সেই নিজ হাতে বাসার জন্য ফুলকিনেন।বিভিন্ন সময় কিনা এই সকল ফুলের গাছগুলো একটা সময় দেখা যায় ঘরের আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে মিনি বাগান । এ রকম এক বাগান প্রেমিক হচ্ছেন,বিশিষ্ট উপস্থাপিকা, মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব অমরাবতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্যা ও ফাইনান্স ডাইরেক্টর মিসেস রাশিয়া খাতুন। আসুন জেনে নেই কি রয়েছে রাশিয়া খাতুনের বাগান লাগানোর গল্পে।
“আমার জন্ম বাংলাদেশে হলেও বেড়ে ওঠা বৃটেনের বার্মিংহাম শহরে।স্কুল- কলেজে অধ্যয়ন কালীন সময় থেকেই মূলতঃ ফুলের পূজারী ছিলাম, ফুল ভালো বাসতাম। কারণ এদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায়ই দেখা যেত আকর্ষণীয় ফুল বাগান।যা সবার মন দৃষ্টি আকর্ষন করে। নাহ ভূল বললাম শুধু স্কুল, কলেজ নয়,অফিস,আদালত,বিভিন্ন হাসপাতাল সহ সরকারী বেসরকারী বহু প্রতিষ্ঠানে ফুল গাছের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়।এমনকি আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের বাড়ীতে বেড়াতে গেলে সুন্দর সুন্দর ইন্ডোর প্লান্ট আমার নজর কারতো।এমনকি অনেকের কিচিনে ঝুলন্ত ফুল গুলো ছিল মন কাড়া।এ সব দেখে দেখে আমার ভাবনা আমাকে তাড়িত করে একটি সুন্দর মনোরম বাগান করা।চাইলে ও কিন্ত সব সময় সব জায়গায় করা যায় না ? কারণ বার্মিংহামের এই যান্ত্রিক শহরে আর যাহাই হউক না কেন, মনের মত বাগান করার সুযোগ কই? তাই ভাবলাম কিভাবে বাড়ীতে একটি সবুজ পরিবেশ তৈরি করা।শুরু করতে চাইলাম ইন্ডোর প্ল্যান্ট দিয়ে। কারণ ইন্ডোর প্ল্যান্ট ঘরের ভিতর এক টুকরো সবুজ এনে দেয় শুধু তা নয় ,বরং কিছু কিছু ইন্ডোর প্ল্যান্ট আছে, যে গুলো ঘরের বাতাস ফিল্টার করতে পারে, শ্বাস প্রশ্বাসের জটিলতা কমিয়ে আনতে পারে। তাই শুরুতেই কয়েকটি হাউস প্ল্যান্ট যথাক্রমে, আমব্রেলা প্ল্যান্ট, আরেকা পাম,পিস লিলি,ড্রাকাইনা ফ্রেগরেন্স, মানি প্ল্যান্ট সহ কয়েকটি হাউস প্ল্যান্ট লাগাই।তন্মধ্যে আমব্রেলা প্ল্যান্টটির বয়স প্রায় ২৮ বছর।এই ২৮ বছরে এই প্ল্যান্টের ডাল থেকে আরো অন্ততঃ ত্রিশ-চল্লিশটি চাঁরা করে অনেককেই দিয়েছি। সব চেয়ে ভালো লাগে এখনও অনেকের বাসায় আমার দেওয়া প্ল্যান্টটি তাঁদের বাসার শ্রী বৃদ্বি করে রেখেছে বলে। পরবর্তীতে যখন আমার নিজের বাড়ী কিনি তখন বাসার সামনে ৪টি গাড়ী রাখার জায়গা এবং পিছনে ছিল অনেক জায়গা। আমি ও আমার স্বামী ফিরোজ রব্বানী মিলে বাগানের পরকল্পনা করি।পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা সামনে ২টি গাড়ির জায়গা রেখে দুই দিকে ফুল বাগান গড়ে তুলি।কারণ বাসা/বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্বি করতে হলে ফুল গাছ লাগানোর বিকল্প নেই। আমাদের ফুল বাগানে বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ, লিলি, ডালিয়া, গাদা সহ অনেক প্রজাতির ফুল গাছ রয়েছে।
পিছনের জায়গায় কিছুই মাটি রেখে স্লাভ লাগানো হয়। মাটির পরিমাণ কম থাকায় মাটি ও টবের মধ্যে সব্জি লাগাই।আমাদের বাগানে ক্রজেট, ক্যাপসিকাম,ব্রুকলি সহ বাংলাদেশী সব্জি যথাক্রমে আলু টমেটো জিঙ্গা,সিসিঙ্গা, লাউ, পুইশাখ, শিম,মূলা সারা ও চাইনিজ পটল,চাইনিজ কুমড়া, বিভিন্ন রকমের মরিচ সহ অনেক কিছু লাগাই।এগুলো নিজে খাই আবার অতিরিক্তগুলো নেইবারদের বিলিয়ে দেই।আমার অনেক ভিনদেশী নেইবার আছে, যাঁরা আমার দেওয়া সব্জিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে পরবর্তীতে তারা নিজেরাই এখন বাগান করে।এর চেয়ে গৌরবের আর কি থাকতে পারে ? বাগান প্রেমিক নেইবারদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে এ বছর আমরা (আমি ও অমরাবতির প্রতিষ্ঠাতা শেবুল চৌধুরী ও অন্যান্যরা) প্রায় ৭০/৮০টি কম্পোস্ট বিতরন করি।যাই হউক,পরিশেষে যে কথাটি বলা দরকার তাহলো ফুল ও সব্জি বাগান মিলে এক সুন্দর মনোরম পরিবেশ আমাদের বাগানে রয়েছে।যে কেউ আমাদের বাসায় বেড়াতে এলে বাগান পরিদর্শন করে পুলকিত হন বলে জানান। পুলক অনভব করেন বিধায় পুলকিত হন বলে আমার স্বামী ফিরোজ রব্বানী বাগানের নাম দিয়েছেন “পুলকপুরি”।পরবর্তীতে অমরাবতির কর্ণধার শেবুল ভাইয়ের ডাকে সারা দিয়ে আমাদের “পুলকপুরি”কে নিয়ে যাই ‘অমরাবতি’র ক্যাফেলায়।ইতিমধ্যে আমাদের বাগান, অমরাবতির বাগান প্রতিযোগীতায় চ্যাম্পিয়ান হয়েছে। আমাদের শখের বাগান সহ অসংখ্য ছোট ছোট বাগানগুলো নিয়ে অমরাবতির নামের কাব্যের পদযাত্রা। সেই যাত্রা পথই হচ্ছে অমরাবতির গল্প। ।