অমরাবতির গল্প মানেই পারিবারিক ঐতিহ্যের গল্প, গাছ গাছালীর গল্প, বৃক্ষ রোপনের গল্প, অমরাবতিয়ানদের গল্প। এ রকম একজন অমরাবতিয়ান হচ্ছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, অমরাবতির সিলেট মহান নগর প্রতিনিধি এ এস জায়গীরদার বাবলা।আসুন জেনে নেই কি রয়েছে ভাই বাবলার গল্পে।
আমার বাড়ী আম্বরখানা, দর্শনদেউড়ীতে অবস্থিত। প্রায় একশত বছর পুরানো জায়গীরদার বাড়ী। ১২০ ডিসিমেল জায়গার উপর নির্মিত বসত ভিটা। পশ্চিম দিকে মালনীছড়া, পূর্বে হযরত শাহজালাল (রাঃ) মাজার রোড সামনে সুনামগঞ্জ রোড।
বাড়ীর সামনে বাঙলো ঘর ফুলে ফুলে সাজানো ছিল চারদিক। আমাদের বাড়ীটি ছিল বিশাল। চারিদিকে আম, জাম, কাঠাল, পেয়ারা, কামরাঙা, লেবু, আতাফল, জাম্বুরা ইত্যাদি ফলের গাছ। সেগুলো ছিল আমার বাবা দাদাদের হাতে লাগানো৷ প্রচুর পরিমান পেয়ারা গাছে ধরত৷ আমরা পেয়ারগুলো গাছে ওঠে ডালে বসে খেতাম। আমার বাবা সব সময় বিভিন্ন ধরনের শাক, সব্জি, তরকারীর গাছ রোপন করতেন। আমি বাবার সাথে থাকতাম, তাঁকে সাহায্যে করতাম। সেই তখন থেকে আমার বাগান করার শখ। তখন খোলামেলা বাড়ী ছিল। চারিদিকে খালি জায়গা ছিল। আমি বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ রোপন করতাম তা নিজেই পরিচর্যা করতাম। কালের বিবর্তনে সেগুলো হারিয়ে যেতে লাগল। জায়গা জমি কমতে শুরু করল৷ আস্তে আস্তে বাড়ী সৌন্দর্য বিলীন হতে লাগল। তারপরও থেমে থাকিনি। তখন থেকে বিকল্প হিসাবে মাটির টবে এবং ঘরের সামনে আমি কিছু জায়গায় ফুলের বাগান করতাম৷ ঘরের আশপাশে কিছু ফলের গাছ, যেমন-জামরুল, আম, লেবু, আমড়া, জলপাই, কমলা ইত্যাদি ফলের গাছ রোপন করেছি। ফলও ধরতে শুরু করেছে।
বর্তমান সময়ে অনেকের মতো আমি শখের বশিভূত হয়ে আধুনিক বাগান হিসেবে ছাদ বাগান প্রতিষ্ঠা করেছি বাসাবাড়ীর ছাদে। শীতে বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি, মরিচ, ক্যাপসিকাম, লেটুসপাতা, টমেটু ইত্যাদি রোপন করি এবং তা নিজেও খাই এবং অন্যদের বিলিয়ে দেই। এবার ছাদ বাগানে যোগ করেছি ড্রাগন ফল চাষ। বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া চারটি গাছ দিয়ে শুরু করেছি ড্রাগন চাষ। আলহামদুলিল্লাহ গাছে ফল ধরতে শুরু করেছে।আমার আরেকটা শখের কথা না বললেই নয়,তাহলো পশু পাখী হাঁস- মোরগ পালন৷ তাদের নিজ হাতে খাবার দিতে খুবই আনন্দ লাগে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি পালন করেছি যেমন খোরগোস, কুকুর, হাঁস, মোরগ ইত্যাদি৷ বাড়ীতে (বাসায়) একুরিয়াম রয়েছে যেখানে সুন্দর সুন্দর মাছ পালন করি।
‘আমরাবতি’ বাগানবিলাসী দের ঠিকানা৷ পরিবেশ বাদীদের ঠিকানা। দীর্ঘ দুই বছর আগে ডাঃ খূর্শিদা তাহমিন সীমু র আমন্ত্রণে অমরাবতি সংঘটনে যোগ দেই৷ আমি তখন থেকেই অমরাবতির বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জড়িত হলাম। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ,শহিদ মিনার বদ্যভূমি ইত্যাদি জায়গায় বৃক্ষ রোপন করি আমরাবতির সদস্যদের সাথে৷ অমরাবতির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শেবুল ভাইর সাথে প্রায় সময় যোগাযোগ হয়৷ তিনি আমাকে বিভিন্ন কাজে অনুপ্রেরণা দেন৷ অমরাবতির সকল ডাইরেক্টসবন্দ অনেক অভিজ্ঞ৷ তাঁরা অনেক দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন৷ তাঁদের শ্রম,মেধা এবং নিরলস প্রচেষ্টার অমরাবতি আজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে৷ আমাদের সিলেটে অনেক সদস্য/সদস্যা আছেন যাঁরা নিষ্ঠার সাথে অমরাবতির সাফল্যের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন৷
আমার ভালা লাগা অমরাবতি এমন এক সংগঠন যে সংগঠন সবুজায়নের জন্য কাজ করে, পরিবেশের জন্য কাজ করে, বাগান প্রকল্পের জন্য কাজ করে এবং প্রয়োজনে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে দ্বিধাবোধ করে না।যে সংগঠনের ব্যাপ্তি,কার্ষক্ষম বলতে গেলে বিশ্বব্যাপি।তাই আমি এই সংগঠনের একজন হয়ে কাজ করছি বিধায় নিজেকে খুব ধন্য মনে করছি।কারন
আমরাবতি এমন একটা সংঘঠন যে আমাদেরকে ফল, ফুলের ইত্যাদি বৃক্ষ রোপনে উদ্বুদ্ধ করে৷ কারন নিজের জায়গা না থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় বৃক্ষ রোপন শুধু আমরাবতির সদস্যরাই করতে পারে। আমরাবতি থেমে থাকতে পারে না। থামতেও পারে না। আমার সৌভাগ্য যে অমরাবতি সংঘটনের মাধ্যমে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে ছিলাম৷ অমরাবতির মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ত্রান ও নির্মান সামগ্রী বিতরন করা হয়৷ আমরাবতি একটি সংঘঠন যা বৃক্ষ প্রেমীদের মনে আনন্দ যোগায়, অনুপ্রেরণা দেয়৷ আমরাবতি এগিয়ে যাক যুগ যুগ ধরে।
এ,এস, জায়গীরদার বাবলা
বাংলাদেশ, সিলেট৷