অমরাবতির গল্প মানেই অমরাবতিয়ানদের স্বার্থকতা।প্রতিটি গল্পই অমরাবতিয়ান দের জীবন্ত করে রেখেছে।রেখেছে সজীব করে।বৃক্ষের পরিচয় কি ফলে আর অমরাবতিয়ানদের পরিচয় কে কর্মে। গাছ গাছালী,ফল ফুল বাগান সব কিছুই অমরাবতিয়ানরা ধারন করে চলেন। সবার গল্প সমান নয় তা যেমন ঠিক, সবাই ভাবনা যে প্রকৃতি ও পরিবেশ প্রেমিক তা যে হলফ করে বলতে পারি তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ রকম একজন হলেন অমরাবতির অন্যতম সদস্যা এবং ঢাকা বিভাগের প্রতিনিধি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মাজেদা রওনক। আসুন জেনে নেই কি রয়েছে মাজেদা রওনকের গল্পে।
অমরাবতির গল্প লিখতে বসেছি কিন্তু আমি তো গল্প লিখতে পারিনা! অমরাবতি নিয়ে আমার মনে যে ভাবনা,যে উচ্ছাস সেগুলোরই খন্ড খন্ড কিছু কথা এখানে তুলে ধরলাম।
ফুল ফলের গাছ পরিবেষ্টিত শহুরে বাড়িতেই আমার বেড়ে ওঠা। স্বভাবতই গাছপালা প্রকৃতির প্রতি ভালবাসার শুরু সেই ছোট্ট বেলার থেকেই। পরিবারের বড়দের সাথে থেকে ফুলের গাছ, বিভিন্ন মৌসুমে সব্জির গাছ লাগানোর অভ্যাস হয়ে যায়। কিন্তু বহমান জীবন এক সময় নিয়ে যায় ইট পাথরে ঘেরা রাজধানী শহরে। যেখানে ছোট্ট একটি বারান্দাই হয়ে ওঠে গাছপালার পাশে থাকার ছোট্ট পরিসর। নতুন সংসারে আমি ঘরকন্না নিয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে আমার স্বামী মহিউদ্দিন খসরু সাহেব এই ছোট বারান্দার মাঝেই কিছু গাছ লাগান টবে। এটুকুই ছিল আমাদের সবুজের কাছাকাছি থাকার সুযোগ।
গাছ লাগানোর যে আগ্রহ ছিল আমার মধ্যে তা দিন দিন স্তিমিত হতে থাকল। এই ভূবন থেকেই আমি সরে যেতে থাকলাম। যদিও ফুল গাছপালা কোথাও দেখলেই সমান ভাবেই ভাল লাগায় ভরতো মন।
বাসা বদলে নতুন বাসায় আসলাম।এখানে বড় দুটো বারান্দা পেলাম।আস্তে আস্তে ফুলের টব বাড়তে লাগলো।এগুলোর মাঝেই পেতাম সজীবতার পরশ।
সময় যাচ্ছিল, এরই মধ্যে যুক্ত হলাম অমরাবতির সাথে আমার আত্মীয়ের আমন্ত্রণে।
নতুন করে প্রাণ জেগে উঠলো।সবুজের আহ্বান আবার সাড়া জাগালো। গাছপালা যেন খুব বেশি কাছে টানতে লাগলো।
যখন ফুলের সিজন থাকতো না তখন অমরাবতিতে মজার মজার ধাঁধা, কুইজ আর নানান প্রতিযোগিতা চলতো।সেগুলোর উত্তর আর কমেন্টস এত প্রানবন্ত, সরস ছিলো যে দিনরাত সকল কাজের মাঝেও মন বিচরণ করতো অমরাবতিতে।অনেক পুরষ্কার ও আমরা পেয়েছি।এখনকার নতুন যুক্ত হওয়া অনেকেরই হয়ত বিষয়টি অজানা।
অমরাবতির আহ্বান আবার নিয়ে গেছে সবুজের সান্নিধ্যে।ঘরে-বাইরে যেখানেই যাই গাছপালা,ফুলফল দেখলেই মন বলে ” ছবি তুলি,অমরাবতিতে দিবো”। সকালবেলা ফেইসবুক খুলেই প্রথম দেখি অমরাবতি জাগলো কি-না। কে কি পোস্ট দিলেন,নিজে কি দিবো? এটা এখন প্রাত্যহিক রুটিনে পরিণত হয়েছে।
আজ অমরাবতি বাগানের সীমানা ছাড়িয়ে বৃহত্তর পরিসরে স্থান করে নিয়েছে।এটা আমাদের জন্য এক পরম সৌভাগ্য,প্রশান্তি ও গৌরবের বিষয়!
অমরাবতির বৃক্ষ রোপন কার্যক্রমে সশরীরে যুক্ত হতে না পারলেও প্রতিটি আয়োজনেই যেন মনেপ্রাণে জড়িত থাকি।
অমরাবতির উদ্যমী,নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের জন্য আজ অমরাবতি দেশে-বিদেশে সর্বত্র নন্দিত। এ জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে,জীব ও পরিবেশ সমৃদ্ধ হবে ইনশাআল্লাহ।
অমরাবতির স্বপ্নদ্রষ্টার জন্য রইলো প্রাণঢালা শুভকামনা। সে সুস্থ হয়ে উঠুক। তার স্বপ্নের সিড়ি বেয়ে এগিয়ে যাক অমরাবতি। মহান আল্লাহতালার কাছে এটাই একান্ত কামনা।