এফ এম খন্দকার মায়া, চুনারুঘাট :
হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০শয্যার সাইনবোর্ড লাগিয়ে ভেতরে চলছে ৩১শয্যা শয্যায় সেবা কার্যক্রম। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সহ স্বজনদের পোহাতে হচ্ছে লাগামহীন দুর্ভোগ।
স্ব শরীরে ঘুরে দেখা যায়,অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে ধ্বসে পড়ছে আস্তরণ,ফাঁটা টাইলস, ভাঙ্গা দরজা ও জানালায় পড়েছে মরিচিকা।পাশাপাশি ডেলিভারি ক্যাবিনে দুর্গন্ধ সহ ডেলিভারি রোগীর রেস্ট ক্যাবিনে নেই বৈদ্যুতিক পাখা,শিশু ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন ক্যাবিনে নেই জেনারেটর ব্যবস্থা,লোকবলের অভাবে নষ্ট হচ্ছে পরিক্ষা নিরীক্ষা কার্যক্রমের যন্ত্রপাতি,বঞ্চিত হচ্ছেন সেবা গ্রহীতা।তদারকি বিষয়ে জানতে কর্তব্যরত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কার্যক্রম উদ্বোধন করলেও লোকবল নিয়োগের ব্যপারে বারবার যোগাযোগ করেও বঞ্চিত হচ্ছেন হাসপাতালের দায়িত্ববানগণ।ফলে ৫০শয্যা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি দিয়ে ৩১শয্যা হাসপাতালের সেবা পরিচালিত করে যাচ্ছেন ঢিলেঢালা ভাবে। ফলে উপজেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ বঞ্চিত হচ্ছিল উন্নত চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম থেকে।এতে বাহিরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ প্রাইভেট হাসপাতালে চওড়া দামে রোগীদের করতে হচ্ছে পরিক্ষা নিরীক্ষা।
ভয়াবহ অবস্থা হচ্ছে,এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চক্ষু, সার্জারী ও গাইনী বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক নেই।নেই জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সার্জারী, এ্যান্থেশিয়া,গাইনি,সহ মেডিকেল টেকনোলজি, ল্যাব টেকনিশিয়ান, অফিস সহকারী, ওয়ার্ড বয়,এমএলএসএস,পিয়ন,সুইপার।ফলে সেবার মান যেমন নিম্নমান,ঠিক তেমনি পরিষ্কার পরিচিন্নতা।ফলে প্রতিদিনই পাঁচশ থেকে সাতশ মানুষের সেবায় ভোগান্তিসহ হয়রানির শিকার হতে হয়।
হাসপাতালে রেজিস্ট্রার বহি তথ্য মতে,এ হাসপাতালের প্রতিমাসে দুই হাজারের বেশি অসহায় দরিদ্র ও নিম্ন জীবন মানের মানুষেরা সেবা গ্রহন করেন।এছাড়াও দুরবস্থায়ও ৩০-৪০ জন মহিলা ডেলিভারি সেবা নিয়ে থাকেন।ফলে পর্যাপ্ত সিটের অভাবে মেঁঝেতে শুয়ে সেবা নিতে হয় রোগীদের।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে সেবাগ্রহীতা জানান,প্রদান গেইটে ৫০ শয্যার সাইনবোর্ড লাগিয়ে জনপ্রতিনিধিসহ দায়িত্বরত ব্যক্তিগন নিজের পায়দা হাসিল করলেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি উপজেলা বাসীর।পাশাপাশি প্রায় পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির লস্কর,লুৎফর রহমান মহালদার সহ নানা প্রতিনিধি হাসপাতাল পরিদর্শন করে ফটোসেশন করলেও এবিষয়ে তাদের নজর আছে কিনা সন্দেহ রয়েই গেছে দাবি।
এ বিষয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মোজাম্মেল হক জানান, পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের সেবায় মোট জনবলের ৬৫ শতাংশের বেশি পদ শূন্য। সাত জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরিবর্তে আছে মাত্র তিন জন।চার জন মিড ওয়াইফের পরিবর্তে নেই একজনও,গাইনি ও এ্যানেস্থেশিয়া না থাকায় অস্ত্র পাচার সেবাও বন্ধ। মেডিকেল, টেকনোলজি,প্যাথলজি,ফার্মেসী, এসআই,ইপিআইয়ের ৬টি লোকের বিপরীতে মাত্র আছে দুজন।অফিস সহায়ক, আয়া,ওয়ার্ড বয়,দুজন করে থাকার কথা হলেও আছে একজন করে,টিকিট কর্মীর দুটি পদই শূন্য।এই শূন্য পদগুলো রেখেই চলছে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের গুরুত্বপূর্ণ সেবা।ফলে নিয়মিতই হিমসিম খেতে হচ্ছে সেবা কার্যক্রম পরিচালনায়।সংকট সমাধানে কর্তপক্ষের কাছে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।